চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সদ্য ভূমিষ্ঠ ১১ (এগার) টি কন্যা শিশুর পরিবারকে পাঠানো হলো ফুল ও নতুন পোশাক
“মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মুজিববর্ষকে স্মরণীয় করে রাখতে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মোঃ জাহিদুল ইসলাম পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে বিভিন্ন প্রকার সামাজিক, মানবিক ও উৎসাহমূলক গণমুখী কার্যক্রমে ভূমিকা রেখে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা এক ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে “কন্যা সন্তান জন্ম হলে ফোন করুন, উপহার পৌঁছে যাবে সাথে সাথে” শিরোনামে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এটি নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে জেলা পুলিশের একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
অদ্য ২০.০১.২০২১ তারিখ সকাল ০৮.৪৫ ঘটিকার সময় চুয়াডাঙ্গা থানাধীন নেহালপুর গ্রামের মোঃ আয়নাল হোসেন জানান তার স্ত্রী মোছাঃ আছিয়া খাতুন গত ১৬.০১.২০২১ খ্রি. তারিখে দেশ ক্লিনিক, চুয়াডাঙ্গায় একটি ফুটফুটে কন্যা শিশু জন্ম দিয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোলরুমে তাদের বাচ্চা ভুমিষ্ট হওয়ার সু-সংবাদ জানানোর সাথে সাথে পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গার নির্দেশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঐ শিশুর জন্য ফুলের তোড়া, নিউবর্ণ বেবী প্যাকেজ ও মিষ্টি নিয়ে উপস্থিত হয়।
পুলিশ সদস্যদের উপহার পেয়ে নতুন শিশুর পরিবারের সদস্যদের আনন্দ বেড়ে যায়। কন্যা শিশুর পরিবারের লোকজন পুলিশ সুপারের পাঠানো উপহার পেয়ে খুব খুশি হয়, পুলিশ সুপারের আন্তরিকতা ও ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন। (২) রাসেল হোসেন তার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন, সাং-দত্তাইল, থানা ও জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনে জানান গত ১৮.০১.২০২১ তারিখে বিআরএম ক্লিনিক সরোজগঞ্জে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছে। (৩) জামাল উদ্দিন ও রুচিনা খাতুন দম্পতি সাং-নুরনগর কলোনী, থানা ও জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১৮.০১.২০২১ তারিখে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে।
(৪) দর্শনা থানার আকন্দবাড়ীয়া গ্রামের মোঃ ফারুক হোসেন জানান, তার স্ত্রী কাকলী খাতুন গত ১৮.০১.২০২১ তারিখে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে। (৫) মোঃ রিপন মিয়া ও খাদিজা খাতুন দম্পতি সাং-আকন্দবাড়ীয়া, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১০.০১.২০২১ তারিখ তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। (৬) মোঃ রেজাউল ইসলাম ও জেসমিন আক্তার দম্পতি সাং-দর্শনা, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১৭.০১.২০২১ তারিখ তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। (৭) সেলিম হোসেন ও রশনা খাতুন দম্পতি সাং-হরিশপুর, থানা-দর্শনা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১১.০১.২০২১ তারিখে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে।
এছাড়াও দামুড়হুদা থানাধীন কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের (৮) হাবিবুর রহমান ও ফাতেমা খাতুন দম্পতি ফোনে জানায় তাদের ০৯.০১.২০২১ তারিখে একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। (৯) জাকের মন্ডল ও মনোয়ারা খাতুন দম্পতি সাং-গোপালপুর, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১৩.০১.২০২১ তারিখ তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। (১০) দেলোয়ার হোসেন ও হালিমা খাতুন দম্পতি সাং-দামুড়হুদা, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১২.০১.২০২১ তারিখ তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে। (১১) শাহাজামাল ও লাকী খাতুন দম্পতি সাং-হোগলডাঙ্গা, থানা-দামুড়হুদা, জেলা-চুয়াডাঙ্গা ফোনের মাধ্যমে জানায় গত ১৩.০১.২০২১ তারিখ তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নিয়েছে।
সংবাদ জানানোর সাথে সাথে পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গার নির্দেশে কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ উল্লিখিত পরিবারের কাছে উপহার সামগ্রী নিয়ে তাদের বাসায় উপস্থিত হন। পুলিশ সুপারের এই ব্যতিক্রমী কর্মকাণ্ডের প্রশংসা এখন স্থানীয় জনসাধারণের মুখে মুখে। কন্যা সন্তান জন্ম নেওয়ার কারণে সংসারে কলহ সৃষ্টি ও পারিবারিক অসন্তোষ দেখা যায়। পুলিশ সুপারের এই মহতী উদ্যোগ হতে পারে সমাজের ঐ সকল পরিবারের জন্য ইতিবাচক বার্তা।
পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গা বলেন, দেশের মোট জনগোষ্ঠির অর্ধেক নারী। এই বিপুল সংখ্যক নারী পিছিয়ে থাকলে সামগ্রিক উন্নয়ন অসম্ভব। তিনি চুয়াডাঙ্গার সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণে সহযোগিতা কামনা করেন।