কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন হাতে পেল বাংলাদেশ। ভারত থেকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে পাঠানো ১৭ লাখ ৯৯ হাজার ২৬২ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইট ঢাকায় এসে পৌছেছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ১৭ মিনিটে এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইটটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ভ্যাকসিন হস্তান্তর করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দোরাইস্বামীর এসব টিকা তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইট ভারতের মুম্বাই থেকে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় রওনা দেয়। সকাল ১০টা ১২ মিনিটে ভারতীয় হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে ভ্যাকসিনসহ একটি উড়োজাহাজের ছবি দিয়ে বলা হয়, গন্তব্য বাংলাদেশে! ভারতে তৈরি কোভিডের চালান বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে!
বাংলাদেশ সরকারিভাবেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে আরও ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনছে, যার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর বাইরে সঙ্কটে প্রতিবেশী দেশকে চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে প্রায় ১৮ লাখ টিকা দিয়েছে ভারত।
বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশকে কোভিড-১৯ টিকা উপহার দিচ্ছে ভারত। দেশগুলো হলো: মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও মরিশাস।
২৫ বা ২৬ জানুয়ারি আসবে ক্রয়চুক্তির ৩ কোটি ডোজের প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ। ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দেশের বিভিন্ন পেশার ২০ থেকে ২৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে টিকা দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হতে পারে। এটি উদ্বোধন করবেন প্রথানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে কুর্মিটোলাসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৪ থেকে ৫শ স্বাস্থ্য কর্মীকে ‘ড্রাই রান’ হিসাবে টিকা দেয়া হবে। আর সব ঠিক থাকলে ৮ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে শুরু হবে টিকাদান কার্যক্রম। বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান জানান, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন যারা গ্রহণ করেছেন তাদের শারীরিকভাবে বড় কোনো সমস্যা এখনো দেখা দেয়নি। তবে ভ্যাকসিন পরবর্তী কারও শরীরে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ভ্যাকসিন গ্রহণকারী সবাইকেই টেলি মেডিসিন সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ১৬২৬৩ নম্বরে ফোন করে এসব সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ের প্রথম ধাপে দেশের মোট জনসংখ্যার ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ অর্থাৎ ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে দেশের ৮ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পরিকল্পনা সরকারের আছে।
দেশের ৩৭ ভাগ শিশু। যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে। তারা কেউ টিকা পাবেন না। যাদের ক্যান্সার আছে বা যারা ক্যান্সারের ওষুধ খেয়ে থাকেন, অথবা যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ নিয়ে থাকেন তারা ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না। এছাড়া যার বর্তমানে কোভিডে আক্রান্ত তারাও টিকা গ্রহণ করতে পারবেন না।