মেহেরপুরসহ সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। ইতি মধ্যে ১৬৪ জন করোনা রোগী সনাক্ত করেছে আইডিসিআর। গত ২৪ ঘন্টায় ৭৯২ জনকে পরীক্ষা করে ৪১ জনের ভিতর কোভিড-১৯ ভাইরাস পাওয়া গেছে। করোনা মোকাবেলায় সারা দেশে চলছে অঘোষিত লক ডাউন। সরকারি বেসরকারি সকল অফিস ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষনা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এই ছুটির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
গত ২৪ মার্চ থেকে মেহেরপুরকে অঘোষিত লক ডাউন করা হয়েছে যা এখনো চলমান। এতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা। এদের জন্য সরকারি বেসরকারি ভাবে দেওয়া হচ্ছে ত্রান সহযোগীতা। চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্যরা সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে ছুটছেন বাড়ি বাড়ি। কখনো দেখা যাচ্ছে রাস্তায় দাড়িয়ে জনগণকে সচেতন করতে আবার নিজের গাড়ি চড়ে রাস্তায় মাইকিং করছেন কেউ কেউ।
এমন অবস্থায় মেহেরপুর-১ আসনবাসী পাশে চাচ্ছেন তাদেও সংসদ সদস্যকে। বর্তমানে মেহেরপুর-১ আসনের এমপি ফরহাদ হোসেন জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মেহেরপুরের এই সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণ সবথেকে বেশি পাশে চাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে। যদিও তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা নীতিনির্ধারনী পর্যায়ের সবার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এবং দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।
তারপরও প্রতিমন্ত্রীর নির্বচনী এলাকার জনগণ তাকিয়ে আছেন অন্য দৃষ্টিতে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে করোনা পরিক্ষার, চলমান পরিস্থিতে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত সহ বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে সাধারণ জনগণ।
আওয়ামী লীগের তৃনমূলের বেশ কিছু নেতা কর্মীরা জানান, আমরা একজন প্রতিমন্ত্রী পেয়েছি। এটা আমাদের সৌভাগ্য। মেহেরপুরের এমন পরিস্থিতিতে জনগণের সর্বোচ্চ দেখভাল করার দায়িত্ব উনার। আমরা সব সময় আতঙ্কে দিন পার করছি। অসুস্থ্য হলে হাসপাতালে যেতেও ভয় লাগছে, কারণ সেখানে চিকিৎসা নেই। আমরা চাইলেও পরিক্ষা করাতে পারছি না। অন্য এলাকার সংসদ সদস্যরা যেমন মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তখন আমরা প্রতিমন্ত্রী পেয়েও অভিভাবকহারা হয়ে পড়েছি।
কুষ্টিয়া সদরের এমপি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ, চুয়াডাঙ্গা ১ আসনের এমপি সোলাইমান হক জোয়ার্দ্দার সেলুন, চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের আলী আজহর টগর, মেহেরপুর ২ আসনের সাহিদুজ্জামান খোকন জনগণের পাশে থেকে করোনা মোকাবেলায় সাহস দিচ্ছেন।
সেইদিক থেকে মেহেরপুরবাসী অনেকটাই বঞ্চিত। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ করোনা মোকাবেলায় দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মেহেরপুরের এই দুঃসময়ে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে পাশে পেলে অনেকটা স্বস্থির নিশ্বাস পেতো বলে মনে করছেন অনেকেই।
মেহেরপুর ২ আসনের এমপি সাহিদুজ্জান জানান, করোনা মোকাবেলা আমার আসনে আমি সদা প্রস্তুত। সরকারি সাহায্য ও আমার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে যতটুকু পেরেছি তাই নিয়ে জনগণের পাশে থাকার চেষ্ট করেছি। ইতি মধ্যে আমি আমার ব্যভক্তিগত উদ্যোগে আমার নির্বচনী এলাকার প্রায় ২ হাজার সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষদের খাদ্য সামগ্রী দিয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তিনি আছেন। সারাদেশের জনগণের কথা তিনি ভাবেন, তারপরও একবার হলেও এমন পরিস্থিতিতে মেহেরপুরে আসা দরকার। এ সময় জনগণ কাছে পেলে খুব খুশি হতো।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ খালেক বলেন, দলীয়, সরকারি ও ব্যভক্তিগত উদ্যোগে আমরা মানুষের পাশে থেকে তাদের ত্রান সহ বিভিন্ন সামগ্রী দিচ্ছি। ইতিমধ্যে আমার নিজ উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়নের ৩’শ অসহায় পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করছি, যা এখনো চলমান। আমাদের এখনি সময় জনগণের পাশে দাড়ানো।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইব্রাহীম শাহিন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি আমাদের সাথে ও জেলা প্রশাসনের সাথে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্সে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। ফরহাদ হোসেন এর নির্দেশে আমরা ঐ সমস্ত পরিবারের তালিকা করছি যাদের প্রয়োজন কিন্তু সাহায্য নিতে পারছেনা।
জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মেহেরপুর বাসীর সব সময় খোজ খবর তিনি রাখছেন। সেই সাথে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রনালয় জন প্রশাসন। সেখানে তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সারা দেশের জনগণের সেবায় তিনি নিয়োজিত। এমন অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী চাইলে তিনি মেহেরপুরে আসতে পারেন।