বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যেখানে লকডাউনে সেখানে তুরস্ক ভিন্ন পথে করোনাভাইরাস মোকাবেলা করছে। ব্যতিক্রমী এ লড়াইয়ে দেশটি আংশিক লকডাউন আরোপ করেছে। অর্থাৎ ২০ বছরের নিচে ও ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাকি নাগরিকরা অর্থাৎ যুবকদের কাজে বের হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে একদিনে অর্থনীতি চাঙ্গা থাকছে, অন্যদিকে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব হচ্ছে। তুরস্কের এ পন্থাকে অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাগত জানিয়েছেন। খবর সিএনএনের।
গত ১০ এপ্রিল তুরস্কে হঠাৎ করেই আংশিক লকডাউন ঘোষণার পরপরই দোকানগুলোতে নাগরিকদের লম্বা লাইন পড়ে যায়। প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে দোকানে দোকানে ভিড় করেন তারা। এ পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, তুরস্ক তার নাগরিকদের সুরক্ষায় যথেষ্ট। এ সময় তিনি ২০ বছরের নিচে এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সীদের ঘরে থাকার নির্দেশ দেন। এর বাইরে সব নাগরিককে কাজে ফিরতে বলেন। তুরস্কে ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলো বন্ধ। পণ্য ডেলিভারির শর্তে রেস্টুরেন্টগুলো খোলা।
পার্কের মতো জনসমাগমস্থলগুলো বন্ধ এবং ব্যাংকের কর্মঘণ্টা সীমিত করা হয়েছে। এর বাইরে কলকারখানা, নির্মাণ কেন্দ্র এবং অন্য ব্যবসাগুলো পুরোদমে খোলা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আংশিক বিধি নিষেধে তুরস্ক সফল হতে পারে।
ব্রিটেনের ল্যানকাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মদ মুনির বলেন, ‘এটি একটি বিকল্প কৌশল। দেশটিতে স্বাস্থ্যবান লোকেরা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে বাজারে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আক্রান্ত হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হচ্ছেন। এ কৌশলের কারণে আক্রান্ত অন্তত ৮০ শতাংশ ব্যক্তি সুস্থ হচ্ছেন।’
কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ডা. জেরেমি রসম্যান বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ পুরো লকডাউনে সেখানে তুরস্কে আংশিক লকডাউন। দেশটিতে আংশিক লকডাউন সফল হচ্ছে তা তাদের কম আক্রান্তের সংখ্যায় বোঝা যাচ্ছে। এটি একইসঙ্গে দেশটির অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে এবং সংক্রমণ কমছে।
তিনি আরও বলেন, কর্মস্থলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং হাত জীবাণুমুক্ত রাখার মতো করোনা বিধি বাস্তবায়নের ওপরই এর সফলতা নির্ভর করছে। তুরস্ক করোনা আক্রান্ত শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় নবম স্থানে রয়েছে। দেশটিতে এখন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। বৃহস্পতিবার আক্রান্ত হয়েছেন চার হাজার ৮০১ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪ হাজার ১৯৩ জন। তবে মৃত্যুহার খুবই কম। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২৫ জন নিয়ে মোট মারা গেছেন এক হাজার ৬৪৩ জন। সূত্র-যুৃগান্তর