করোনাভাইরাসে মানুষকে সচেতন করতে ও শনাক্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) আর নমুনা সংগ্রহ করবে না। প্রতিষ্ঠানটি গবেষণার কাজে মন দেবে। এখন থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতর নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয়ের কাজটি করবে।
রোববার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে আইইডিসিআরের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, এখন থেকে আইইডিসিআর শুধু গবেষণার অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করবে। রোগীর রোগ নির্ণয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ আইইডিসিআরের কাজের মধ্যে পড়ে না। আসলে আইইডিসিআর এপিডেমিওলজিক্যাল সার্ভিলেন্সের অংশ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করে। কমিউনিটি লেভেলে রোগ নির্ণয়ের জন্য যে নমুনা পরীক্ষা, তার দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়ে নিয়েছে। তারা এখন থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে এবং আইইডিসিআরের বাইরে অন্য ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করবে।
ডা. মুশতাক হোসেন জানান, নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিস্তারিত গবেষণার জন্য যে নমুনা সংগ্রহ করা প্রয়োজন, সেগুলোই শুধু করবে আইইডিসিআর।
আইইডিসিআরসহ দেশের ৩১টি গবেষণাগারে কোভিড-১৯ শনাক্ত পরীক্ষা চলছিল। এখন আইইডিসিআর এই দায়িত্ব থেকে সরে গেল। রোববার নাগাদ দেশে যে ৮১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তার প্রায় ১৩ হাজারই পরীক্ষা করা হয় আইইডিসিআরের পরীক্ষাগারে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বিবিসিকে বলেন, সারা দেশে এই ভাইরাস সংক্রমণের পরিধি বেড়েছে এবং ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে বলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আইইডিসিআর এখন থেকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও এর নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গবেষণা কাজ পরিচালনা করবে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর চীনের উহানে কোভিড-১৯ ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশে এই রোগ প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রেখে আসছে আইইডিসিআর।
করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারীতে রূপ নেয়ার আগেই বাংলাদেশে কারও এই ভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা আইইডিসিআরের ল্যাবরেটরিতেই পরীক্ষা হয়। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিশ্চিত করে তারা।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে রোববার নাগাদ ৯ হাজার ৪৫৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১৭৭ জনের। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ১ হাজার ৬৩ জন। যদিও একদিন আগে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৭৭ জন। সুত্র-যুগান্তর