দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার নতুন পড়ায় শাফা কেমিক্যাল কোং নামের একটি প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে তৈরি করা হচ্ছে ঝিলিক ডিটারজেন্ট পাউডার। প্রতিষ্ঠানটির ভিতরে প্রবেশ করলে অনায়াসে নিঃশ্বাসের সাথে পাউডারের কণা প্রবেশ করবে। প্রতিষ্ঠানটির মালিক তরিকুল ইসলাম ও তার একমাত্র সহকারী যার নেই কোন ডিটারজেন্ট তৈরির ন্যূনতম একাডেমিক শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ।
অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ঠিক কোন কাগজপত্র নেই। তারিকুল যে ঝিলিক পাউডার তৈরি করছেন সে পাউডারের বাজার মূল্য অন্যআন্য পাউডারের তুলনায় অনেক কম। বর্তমান বাজারের বিভিন্ন কোম্পানির পাউডার রয়েছে যেমন- রিং হুহল পাওয়ার, হুহল পাউডার, সার্ফএক্সেল , রে পাউডার, ঘড়ি পাউডার যথাক্রমে ১১০, ৮০, ১৭০০, ১২৫, ১০০ টাকা দরে বিক্রয় করা হচ্ছে। সেখানে তরিকুল ইসলামের পাউডার টি অত্যন্ত নিন্মমানের হওয়ার জন্য মাত্র ৪০-৫০ টাকা দর কেজিতে বিক্রয় করছে ‘ঝিলিক ডিটারজেন্ট পাউডার’ নামের পাউডার টি। ঝিলিক পাউডার বাজারের অন্য সকল পাউডারের থেকে কম দামে পাচ্ছেন বলে গ্রামের সহজ সরল মানুষেরা না বুঝে হচ্ছেন মহা খুশি। খুশির সাথে পাউডার কিনে বাড়ি নিয়ে কাপড়চোপড়সহ নিজেদের অজান্তেই ক্ষতিগ্রস্থ করছেন শরীরের চামড়া।
তরিকুল ইসলামের কাছে জানা যায় দীর্ঘ ৭/৮ বছর সে এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। আমার বিএসটিআই এর লাইসেন্স রয়েছে এবং তার সমস্ত ডকুমেন্ট ঠিক আছে।
নিন্মমানের ভেজাল ডিটারজেন্ট পাউডার মানবদেহের কি পরিমাণের ক্ষতি করে থাকেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ সোহরাব হোসেন বলেন- নিন্মমানের ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহারের কারণে কাপড়ের রং নষ্ট হওয়া সহ শরীরে চর্মরোগের দেখা মেলে। এ ধরনের পাউডার দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে ক্যান্সারে আক্রান্তের আশঙ্কা থাকে। নিন্মমানের পাউডার ব্যবহার এড়িয়ে চলা ভালো।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান জানান- শাফা কেমিক্যাল কোং নামের প্রতিষ্ঠানটির নামে অভিযোগ পাওয়ার প্রক্ষিতে সরেজমিনে যাওয়া হয়েছিলো। সেখানে পৌঁছানোর পর প্রতিষ্ঠানটির মালিক তরিকুলের আত্নবিশ্বাস দেখে কিছুটা বিচলিত বোধ করি। একজন নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ কেন? পরবর্তীতে তার লাইসেন্স দেখার পর ঠিক বিষয় জানা যায়। দীর্ঘদিন যে নামে ব্যবসা পরিচালনা করছে সেই নামের সাথে লাইসেন্সের নামের কোন সাদৃশ্য পাওয়া যায় নাই। অত্যন্ত নিম্নমানের উপাদান ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছিলো এই ডিটারজেন্ট। এছাড়াও তরিকুল ইসলামের একমাত্র সহকারীর কাছে ডিটারজেন্ট তৈরির প্রক্রিয়া জানতে চাইলে সে জানায়, ১২ টি উপাদান একসাথে মিশিয়ে এই পাউডার তৈরি করছি। এই উপাদানগুলোর নাম সে জানেও না। সে শুধু তরিকুল ইসলামের নির্দেশনা মতো মিক্সিং করে থাকেন। পরবর্তীতে তরিকুল তার ভুল স্বীকার করেন। মোবাইল কোটের মাধ্যমে ঐ প্রতিষ্ঠানটিকে অর্থ দণ্ড করা হয়। কাগজপত্র ঠিক করে নিয়ম মেনে ঠিক পদ্ধতিতে ডিটারজেন্ট উৎপাদন করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।