ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শহীদ নূর আলী ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শাখা শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তির আশ্বাস দিয়ে ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার শহীদ নূর আলী ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি শাখা শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তির আশ্বাস দিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তি এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় এবং তাদের দেয় টাকা ফেরত না পাওয়া তারা অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরুর বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এ অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের, যশোর বোর্ডের চেয়ারম্যান, দূর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দফতরে। লিখিত অভিযোগে তারা জানান, ডিগ্রি শাখা এমপিও ভুক্তির প্রলোভন ও প্রতিশ্রুত দিয়ে অধ্যক্ষ তাদের নিকট থেকে ১০ লক্ষ টাকা আদায় করে। এমপিও না হলেও পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিক্ষকদের টাকা ফেরত দেননি। তাঁরা ২০১৫ সালে মোটা অংকের টাকা ডোনেশান দিয়ে ডিগ্রি পর্যায়ে নিয়োগ পান। এর পর থেকে তাঁরা কলেজের কোন অর্থনৈতিক সুবিধা পাননি। ফলে তাঁরা অর্থাভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এরই মধ্যে ২০১৯ সালে স্নাতক শাখার শিক্ষকদের এমপিও ভুক্তি করে দিবেন এই মর্মে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু শিক্ষকদের প্রতিশ্রুতি দেন ডিগ্রি শাখার সকল শিক্ষক্ষ কর্মচারী মিলে ২০ লক্ষ টাকা দিতে পারলে এমপিও ভূক্ত হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিক্ষক রবিউল ইসলাম, রফিকুজ্জামান, মনিরুজ্জামান, কামরুন্নাহার, জেসমিন আক্তার, হায়দার আলী সহ একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করে জানান, এমপিও ভূক্তির জন্য ডিগ্রির সকল শিক্ষক কর্মচারী তাদের কেউ জমি বন্ধক রেখে, কেউবা গরু ছাগল বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষ স্যারের নির্দেশে কলেজের সহকারী অধ্যাপক মাসুদ সাজ্জাদ ও প্রভাষক প্রবীর কুমার বিশ্বাস এর নিকট প্রদান করি এবং এমপিও হয়ে গেলে আরও ১০ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হয়। তবে এমপিও ভুক্তি না হলে আমাদের দেয় অগ্রিম ১০লক্ষ টাকা স্ব স্ব শিক্ষককে ফেরত দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ২০১৯ সালে ডিগ্রি শাখা যখন এমপিও হলো না, তখন আমরা কিছু শিক্ষক অধ্যক্ষের নিকট টাকা ফেরত চায়। কিন্তু তিনি আমাদের কথায় কোন প্রকার কর্নপাত করেননি এবং টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন ধরণের তালবাহনা শুরু করেন। অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের মদদ পুষ্ট হওয়ার কারণে তাঁর নিকট টাকা ফেরত চাওয়ার জন্য কেউ সাহস করেনি। এভাবে ৬টি বছর অতিবাহিত হলেও আমাদের টাকা আজও ফেরত পায়নি বা এমপিও ভুক্তি করাও হয়নি, ফলে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।
এদিকে সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারের শাসনামলে অধ্যক্ষ কজলেজের প্রভাবশালী শিক্ষক সুব্রত নন্দী, কমিটির সদস্য গোলাম রসুলকে সাথে নিয়ে কলেজে নিয়োগ প্রদান সহ কোটি কোাটি টাকারও বেশি বানিজ্য করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও অধ্যক্ষ তাঁর বন্ধু মহল নিয়ে কলেজে, আওয়ামী নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে। একাধিক জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের নির্বাচনী প্রিজাইডিং অফিসারসহ নানাবিধ অপকর্ম করেছেন। সেই সব নির্বাচনে নিদিষ্ট কিছু সংখ্যক শিক্ষক দায়িত্ব পালন করতেন। শহীদ নূর আলী কলেজ থেকে ভোট, পরীক্ষাসহ সকল ডিউটি ভাগ-বন্টন করতেন অধ্যক্ষের অনুসারীরা। ভুক্তভোগী শিক্ষকরা অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের টাকা ফেরতসহ এ সকল ঘটনার সুষ্ট তদন্তস্বাপেক্ষ বিচার দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ রাশেদ সাত্তার তরু বলেন আমি এর সাথে জড়িত নয় তারা সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার সাহেবের সাথে যোগাযোগ করে ইসলামী ব্যাংকের একটি নিদিষ্ট একাউন্টে জমা দিয়েছেন। এর বাইরে আমি কিছু জানিনা।