কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সীমান্তবর্তী পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী দুই ব্যক্তিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল বুধবার পদ্মা নদীর হাডিঞ্জ ব্রিজ ও সাঁড়া এলাকায় যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করেন ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুণ্ডু।
অভিযানে ভেড়ামারার ফয়েজুল্লাহপুর গ্রামের ইদ্রিস প্রামাণিকের ছেলে আরিফুল ইসলামকে ৫০ হাজার এবং রাইটা গ্রামের বজলু মহলদারের ছেলে রফিকুল ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুণ্ডু বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় অভিযান চালিয়েছে সদর ও মিরপুর উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন স্পটে এই অভিযান পরিচালিত হয়। তবে একই সময়ে কুষ্টিয়া সদর ছাড়াও ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয়।
সম্প্রতি মিডিয়ায় কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে ১১ পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে ১১ প্রভাবশালী। ওই সংবাদের পর নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন।
ভ্রাম্যমাণ অভিযান সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীর ১১টি স্পট থেকে প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে সরকারের শতকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে এই বালুখেকো প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার সকাল থেকেই এই অভিযান শুরু করে প্রশাসন।
উপজেলা প্রশাসন ছাড়াও অভিযানে যৌথভাবে নেতৃত্ব দেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নৌ পুলিশ সদস্যরা। অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান নিজ নিজ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে নৌ-পুলিশের উপ-পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা বলেন, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে পদ্মার পাড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে দুইজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়াও অন্যান্য উপজেলায় ‘যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে এই অভিযান চলাকালে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের নদীতে পাওয়া যায়নি। কোনোভাবে হয়ত অভিযানের কথা জানতে পেরে তারা পালিয়েছে, চলমান এই অভিযানে স্পটে বালু উত্তোলনরত অবস্থায় পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
অভিযান শেষে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে। সেজন্যই মূলত আজকের এই অভিযান। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে যৌথভাবে গঠিত মনিটরিং টিম এই অভিযান পরিচালনা করছেন। চলমান এই অভিযান নিয়মিত চলতে থাকবে।’