শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ-এমপি।
তিনি বলেন, জাতির পিতা একটি অসাম্প্রদায়িক দেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। ক্ষুধামুক্ত, উন্নত ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সাড়ে তিন বছরের মাথায় সোনার বাংলা গড়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা হয়েছে। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সংগ্রাম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় ফিরেছে। যে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত ছিল আজকে সেই বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।
আজ শনিবার (১৬মার্চ ) সকালে ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের মাধবপুর এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী ও সহায়তা প্রদানকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। একসময় এই এলাকাটি চর এলাকা ছিল। এখন রাস্তা ঘাটসহ এলাকায় অনেক পাকা বাড়ী হয়েছে। এলাকার মানুষের উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুধামুক্ত এবং দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন বলেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ-এমপি আরও বলেন, এমন ভয়াবহ আগুন যা আগে কখনো দেখিনি এই এলাকাবাসী।ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা ভেঙে পড়বেন না মনোবল হারাবেন না। আপনাদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যা যা করণীয় তাই করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাবো। এনজি থেকে যারা লোন নিয়েছেন আগামী ৬ মাসে কোন কিস্তির টাকা দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ না করে বিষয় টি দেখতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন তিনি। একইসাথে বিনাসুদে ঋণ প্রদান করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যেন ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারে এজন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ কামারুল আরেফিন বলেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনার সময় আমি ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা অপারেশন থিয়েটার চালুর অনুষ্ঠানে ছিলাম। এলাকার মানুষের জন্য হাসপাতালের অপারেশন চালুর পর এক প্রসুতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে নবজাতককে কোলে নিয়ে যখন আনন্দ উল্লসিত করছও ঠিক তখনই এই অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পেয়ে আমি নিজে ছুটে যায়। এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করি। একেএকে ফায়ার সার্ভিসের বারোটি ইউনিটের মাধ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। ততক্ষণে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় হাজারো কৃষকের স্বপ্ন। এরপর আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে আমাদের নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপির পরামর্শে এবং সহায়তায় তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরেছি। আমরা আজকে ৫০০ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী, শাড়ী, লুঙ্গি ও প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা দিচ্ছি। এবং আমি কথা দিচ্ছি আগামী ঈদের সামনে বাকী ৩৬৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে এমন সহায়তা প্রদান করবো পাশাপাশি এসব কৃষকরা যেন ক্ষতি কাটিয়ে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোঃ কামারুল আরেফিন-এমপি, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ এহেতেশাম রেজা, ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ রফিকুল আলম চুনু, ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আক্তারুজ্জামান মিঠু, ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকাশ কুমার কুন্ডু, মিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভারপ্রাপ্ত আবুল কাশেম জোয়ার্দার, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল, ভেড়ামারা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আলম জাকারিয়া টিপু ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন প্রমুখ।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০০ পরিবারের প্রত্যেককে চাল, ডাল, তেল, খেজুর, সেমাই, চিনি, ছোলা, শাড়ী, লুঙ্গিসহ দুই হাজার নগদ টাকা প্রদান করা হয়।