কুষ্টিয়ার মিরপুরে কৃষি ফসলে ক্ষতিকর পোকা নিধনের জন্য আলোক ফাঁদের ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সব শ্রেণীর কৃষকের কাছে। ফলে ফসল উৎপাদনে কীটনাশকের ব্যয় এবং বিষমুক্ত ফসলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি উভয়ই কমছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার চিথলিয়া ও বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাড়ারা ব্লকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়।
এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপ সহকারী কর্মকর্তা নিহারুল ইসলাম একযোগে উপজেলার ৪০ টি ব্লকে আলোক ফাঁদ স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এছাড়াও বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের খাড়ারা ব্লকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আনিসুর রহমান, উপ সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলাম, উপ সহকারী ময়নুল ইসলাম রাজীব, শাহানাজ সুলতানাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি প্রাকৃতিক উপায়ে কৃষি ফসলের জন্য ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত এবং নিধনের লক্ষে আলোক ফাঁদ ব্যবহার শুরু হয়।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে প্রচারণার জন্য প্রথমে কৃষি অফিস কর্তৃক আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়। পরে তা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে এখন প্রতিদিনই কোন না কোন মাঠে কৃষকরা নিজেরাই আলোক ফাঁদ স্থাপন শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, ফসলি জমির ধারে দুই থেকে তিন ফিট উপরে একটি ডিটারজেন্ট পাউডার মেশানো পানির গামলার উপরে একটি বাল্ব জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আলো দেখে পোকারা উড়ে গিয়ে ওই পানিতে পড়ে মারা যায়। ফলে ক্ষতিকর পোকার সংখ্যা কমতে থাকে। আর ওই ফসলের জমিতে চরম ক্ষতিকর মাজরা, বিপিএইচ ও পাতামোড়ানো পোকাসহ অন্য কোন পোকা আছে কিনা তা জরিপ করা হয়। যদি ক্ষতিকর পোকা থাকে তা দমনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
কেউপুর গ্রামের আদর্শ কৃষক ফারুখ আহমেদ, লিটন আহমেদ চুনিয়াপাড়া গ্রামের জিন্নাহ মিয়া বলেন, আলোক ফাঁদের মাধ্যমে ক্ষতিকর পোকা নিধন পদ্ধতিটা খুবই দারুন। শুধু ফসল নয়, বাড়িতেও বিরক্তিকর পোকা নিধনে আলোক ফাঁদ ব্যবহার উপকারে আসে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবীদ ড. হায়াত মাহমুদ জানান, আলোকফাঁদ হলো কোনো কিছু আটকানোর একটা যন্ত্র। এই যন্ত্রে নানা রকমের কৌশল অবলম্বন করে শিকার ধরা বা আটকানোর ব্যবস্থা করা হয়। বেশ কিছু পোকা আছে যারা আলোতে আকৃষ্ট হয়। তাই আলোক ব্যবহার করে আলো-আকর্ষী এসব পোকা আটকানোর বা আকৃষ্ট করে মেরে ফেলার জন্য যে ফাঁদ তৈরি করা হয় তাকেই আলোক ফাঁদ বলে। কৃষকের উপকারের জন্য আমরা আলোক ফাঁদ এর ব্যবহার নিশ্চিত করেছি। এর ফলে ফসলের ক্ষতিকর পোকা শনাক্ত করার ক্ষেত্রে খুব ভালো একটি পদ্ধতি। তাই কৃষকদের আলোক ফাঁদ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।