কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় অনুমোদনহীন ৫টি ইট ভাটায় অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় ৫টি ইটভাটা মালিককে ১লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন।
এসময় কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, অভিযানে সদর উপজেলার বলরামপুর এলাকার আরএসবি ব্রিকসের মালিক সাঈদ হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা, বিইএসটি ব্রিকসের মালিক জামাল উদ্দিনকে ৫০ হাজার টাকা, আমানতপুর এলাকার এমএইচবি ব্রিকসের মালিক মহির উদ্দিনকে ৩০ হাজার টাকা, আমানতপুর এলাকার আরএসবি ব্রিকসের মালিক জাফর আহমেদকে ৩০ হাজার টাকা ও বৈদ্যনাথপুর এলাকার রঞ্জু ব্রিকসের মালিককে ২৫ টাকা জরিমানা করা হয়।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দবির উদ্দিন জানান,কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ৫টি ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৯ আইন অনুযায়ী ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে বৈদ্যনাথপুর এলাকার রঞ্জু ব্রিকসের ড্রাম চিমনী ইটভাটার কিলন ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ওই সব ইট ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। এগুলো নিয়মনীতি না মেনে অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছিল। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা জানান, কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় দুইশতাধিক ইটভাটা আছে। যার মধ্যে ১৩৭টি অনুমোদন পেয়েছে। এগুলোতে এক মৌসুমে ১৩০দিন ধরে ইট পোড়ানো হয়। প্রতি ১টি ভাটায় ১ দিনে ১৬ টন কাঠ পুড়লে এক মৌসুমে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে ২০৮০ টন। জেলার সবগুলি ইটভাটার হিসেব মতে, প্রায় ৩ লাখ ১২ হাজার মে.টন কাঠ পুড়ছে ভাটাগুলোতে।
কুষ্টিয়া জেলায় অতীতে সর্বত্র খেজুর গাছ ছিল। কিন্তু এখন ইটভাটার জ্বালানির দাপটে খেজুর গাছ কেটে সাবাড় করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে খেজুর গাছের চাহিদা অনেক। অনেক খেজুর গাছ বিক্রি করা হয়েছে। এখন এ জেলায় যা আছে, চাহিদার তুলনায় অনেক কম।
পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় বলেন, ‘ইটভাটা খেজুর গাছ ধ্বংসের অন্যতম কারণ। ইটভাটার সৃষ্ট দূষণে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কালো ধোঁয়ার কারণে মানুষের ফুসফুসের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট ও ঠান্ডাজনিত নানা রোগ দেখা দিতে পারে। মানুষের ক্ষতির সঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয়ও ঘটছে। কৃষি উৎপাদন ও ফলমূলের ফলন কমে যাচ্ছে। খেজুর গাছসহ গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে।’