কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়িতে এক কিশোরকে রাতভর নির্যাতনের অীভযোগ পাওয়া গেছে। কুমারখালী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতার ছেলের বিরুদ্ধে বুধবার রাতে কিশোরকে পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ওই কিশোরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় তার পরিবার। এখন আওয়ামী লীগ নেতার ভয়ে পরিবারটি পুলিশকে ঘটনা জানানোরও সাহস পাচ্ছে না।
মারধরের শিকার কিশোরের নাম কামরুজ্জামান (১৬)। সে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বুরুলিয়া গ্রামের সমসের আলীর ছেলে। কামরুজ্জামান কাতলাগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
কামরুজ্জামানকে কুমারখালীর পান্টি ইউনিয়নের ৮ নম্বর রাজাপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনছার আলী মিস্ত্রির বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। তাকে আনছারের ছেলে শুকুর আলী, একই ওয়ার্ডের বাবলু মোল্লার ছেলে রানা মোল্লা ও মৃত মসলেম মোল্লার ছেলে তাইজাল মোল্লা ধরে নিয়ে যান।
শনিবার আনছার আলী বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ পড়তে উঠে জানতে পারেন, শুকুর একটা ছেলেকে ধরে নিয়ে ঘরে আটকে রেখেছে। কথা বললে ছেলেটি জানায়, তাকে খুব মারধর করা হয়েছে। ব্যস্ততা থাকায় তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে কী হয়েছে, জানা নেই। এমন ঘটনা আগেই পুলিশকে জানানো উচিত ছিল। এ জন্য তিনি ক্ষমা চান।
ভুক্তভোগী কামরুজ্জামান জানায়, গত বুধবার সে রাজাপুর গ্রামে বোনের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে বের হয়। সন্ধ্যার পর গ্রামটির মসজিদের সামনে পৌঁছালে শুকুর, রানা ও তাইজাল মোটরসাইকেলে করে তাকে ধরে নিয়ে যান। বাড়িতে আটকে রেখে রাতে তাকে রড ও গাছের ডাল দিয়ে পেটানো হয়। ফজরের আজানের সময় তার পরিবারকে ফোন দেওয়া হয়। ফোন পেয়ে তার চাচা মো. বাদশা ও মো. সোহেল সেখানে যান।
সেখানে কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে ৫০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। না দিলে হয় তাকে মেরে ফেলা হবে, না হয় মাদকসহ পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। দুপুরে ১০ হাজার টাকা দিয়ে কামরুজ্জামানকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা।
শুকুর আলীকে তার মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলেও পাওয়া যায় নি।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, এ ঘটনায় এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। ভুক্তভোগীকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে।