কুষ্টিয়ায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে আরও সাত জনের। এ সময় ২২৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত জেলায় ৬৩ হাজার ৪৪২ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৬১ হাজার ১৫৬ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বর্তমানে কুষ্টিয়ায় সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৩৫৩ জন। তাদের মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ২০৪ জন এবং হোম আইসোলেশনে আছেন ২ হাজার ১৪৯ জন।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে কুষ্টিয়ায় চলমান লকডাউন আগামী ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন কার্যকরে সারাদেশের মতো কুষ্টিয়ায় মাঠে নেমেছে প্রশাসন। শুক্রবার দ্বিতীয় দিনেও র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর তৎপরতা দেখা গেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জনসমাগম ঠেকাতে মাইকিং করে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করছে প্রশাসন। এই লকডাউন বাস্তবায়নে ৬টি উপজেলায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন আছে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, কঠোরভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশ মাঠে তৎপর রয়েছে।
জেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি করা হচ্ছে। সবার কাছ থেকে লকডাউন কার্যকর করতে সহযোগিতা পাচ্ছি। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। সব উপজেলায় হু হু করে বাড়ছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা।
লকডাউনের মধ্যেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে রাস্তাঘাটে চলাচল করছে। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ফলে লকডাউনের সুফল মিলবে না। জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার প্রবণতার কারণে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। করোনার সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া বেশ কঠিন হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে মাঠে নেমে কাজ করা হচ্ছে। আমি নিজেও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছি।
এছাড়া বিধিনিষেধ প্রতিপালনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। তারা লকডাউন কার্যকর করতে পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।