রবিবার দুপুরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বাংলাদেশে তিন জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানানোর পর থেকে বিভিন্ন ঔষধের দোকানে মাস্ক বিক্রয় বেড়েছে।
এই সুযোগে দোকানিরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এক দিনের ব্যবধানে দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বেশি দামে বিক্রি শুরু করেছে। যদিও এর আগে থেকেই ৫ টাকার মাস্ক বিক্রয় শুরু হয়েছিল ২০টাকায়। আর সেই মাস্ক এখন কুষ্টিয়ায় ৪০/৭০ টাকা বিক্রয় করছে দোকানিরা। গতকাল সোমবার কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।
এদিকে সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মাস্ক পরতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে দ্বিধাবিভক্ত সাধারণ জনগণ গণহারে মাস্ক ব্যবহার করছে। তবে এতে কোনো ক্ষতি নেই, বরং উপকারই হচ্ছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিন্তু এ সুযোগে মাস্ক ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম হাঁকিয়ে অনৈতিকভাবে মাস্ক বিক্রি করে চলেছেন। ফলে কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন ক্রেতারা।
এক্ষেত্রে সাধারণ মাস্কের চেয়ে জীবাণু প্রতিরোধক মাস্কের চাহিদা বেশি লক্ষ্য করা গেছে। কুষ্টিয়া আর.এ.খান চৌধুরী রোড এলাকায় অবস্থিত সাফা ফার্মেসি মেডিক্যাল মাস্ক সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু এখন সেখানে মেডিক্যাল মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে এখন সিনথেটিক কাপড় ফাইবার দিয়ে তৈরি মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে।
কিন্তু ২৪ ঘন্টা পর পর দাম নিচ্ছে দ্বিগুণ। তাদের দাবি মাস্কগুলোর স্বল্পতার কারণে দাম কালকের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এছাড়া ফুটপাতে হকারদের কাছেও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা ও বিক্রির চাপ। এছাড়া বিভিন্ন ওষুধের দোকানে মেডিকেটেড মাস্ক তো দূরের কথা সাধারণ মাস্কই পাওয়া যাচ্ছে না, আর যা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম কোথাও দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ বলেন, সকালে স্কুলে যাওয়ার আগে মাস্ক কেনার জন্য বাসার কাছে চৌড়হাস ওষুধের দোকানে খুঁজলাম কিন্তু পেলাম না। পরে একটা ওষুধের দোকানে সাধারণ ৫ টাকা দামের মাস্ক পেলাম কিন্তু দাম চাইলো ৩০ টাকা। না কিনে কুষ্টিয়া এনএস রোডের তমিজ উদ্দিন সুপার মার্কেটে মেডিকেটেড মাস্ক পেলাম যার মূল্য চাইলো ৫০ টাকা। এর আগে এই মাস্ক ২০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। এখন দামের এই বিশাল ফারাক। এখন সরকারসহ সবাই মাস্ক ব্যবহার করতে বলছে, আমরাও ব্যবহার না করেই বা কী করবো?
এদিকে করোনা ভাইরাস ৩০ শতাংশ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় উল্লেখ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, এ রোগ ৩০ শতাংশ মানুষ থেকে মানুষে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই মাস্ক ব্যবহার করা ভালো।
মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, মাস্ক পরে অর্থ অপচয় করার দরকার নেই। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা ধরা পড়লে মাস্ক পরলেই চলবে।
এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
মেপ্র/আরপি