কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ এলাকার কৃষক সিহাব উদ্দিন। তিন বিঘা জমিতে গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপির চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত একটা বাঁধা কপিও বাজারে বিক্রি করতে পারেননি। ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তার বাঁধাকপি। গতবছর বেশ ভালো ফলন পেলেও বাঁধাকপিতে এবার পুরো লোকসানের আশঙ্কা করছেন তিনি।
গ্রীস্মকালীন সবজিতে অধিক লাভ হয় প্রতি মৌসুমে। তবে এবছর গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপি চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এমনকি এসব বাঁধাকপি বিক্রি করে শ্রমিকের খরচও উঠছে না। শ্রমিকের খরচ এবং পরিবহনের কথা চিন্তা করে চাষিদের বাঁধাকপি এখন জমিতেই পঁচে যাচ্ছে। খরচের ভয়ে জমি থেকে তুলছেন না বাঁধাকপি।
এদিকে, স্থানীয় বাজারে যার দাম ২ থেকে ৫ টাকার মধ্যে। মাঠ থেকে যা আনতেই খরচ হয়ে যায় ৩ থেকে ৪ টাকা।
চাষিরা দাবি করছেন, মহামারি করোনার কারণে বাঁধাকপি জেলার বাইরে পাঠাতে পারছেন না।বাইরে থেকে পাইকারি ক্রেতারাও আসতে পারছেন না। তাই বাঁধাকপি না কাটার কারণে জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা, আবুরী এলাকার বেশ কয়েকজন কৃষক প্রতিবছরই গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপির চাষ করে। এবছরও প্রায় ১০ থেকে ১২ বিঘার মতো জমিতে তারা বাঁধাকপির চাষ করেছেন।
এদিকে স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, কৃষকরা যাতে তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় এজন্য সরকার ২০১৫ সালে আবুরী এলাকায় কৃষিপণ্য সরবাহ ও বিপণন কেন্দ্র স্থাপন করে। তবে ওই বিপণন কেন্দ্রের জমির মালিক জুমারত আলী নিজের ইচ্ছা মতো কেন্দ্রটি ভোগ দখল করে আসছে। তারা কৃষকদের কোনো পণ্য কিনতে চান না। আর সবজি চাষিদের বিভিন্ন হয়রানি করার কারণে তারাও সেখানে যেতে চান না।
এ প্রসঙ্গে মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, গ্রীস্মকালীন বাঁধাকপি চাষটা বেশ লাভজনক হওয়ায় মিরপুরের বেশ কয়েকজন কৃষক এ বাঁধাকপির চাষ করে থাকেন। প্রতিবছর তারা বেশ ভালো দাম পেয়েছেন। তবে এবার করোনা কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে। দাম অনেকটাই কম। তবে কৃষকরা যাতে ন্যায্য দামে বাঁধাকপিসহ অন্যান্য সবজি বিক্রি করতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।