কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গোপন কারখানায় তৈরি হচ্ছে নামি-দামি ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী। বিদেশি ব্র্যান্ডের কৌটা ও লেবেল হুবহু নকল করে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে। ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে তৈরি এসব নকল প্রসাধনী মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নকল প্রসাধনীর ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগের পাশাপাশি ক্যানসারের মতো ভয়ানক ব্যাধিতে মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। গত শনিবার রাতে কুষ্টিয়া শহরের কাটাইখানা মোড় এলাকায় অবস্থিত চাঁদের পরী নামক একটি নকল কসমেটিকস কারাখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত।
অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সবুজ হাসান। তিনি জানান, বিএসটিআই এর লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন নামে কসমেটিকস পণ্য সহ বিভিন্ন দেশের নামি-দামী প্রতিষ্ঠানের মোড়কে নকল প্রসাধনী সামগ্রী ( ৩১ টি পণ্য) উৎপাদন ও গোপনে বাজারজাত করে আসছিলো চাঁদের পরী নামক একটি নকল কসমেটিকস কারাখানা মালিক। এসবের অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এর ৪৩, ৫০, ৫২ ও ৫৩ ধারায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক মাওলানা ইলিয়াসকে ২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এ সময় বিপুল পরিমান কসমেটিকস সামগ্রী ধ্বংস করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে কোম্পানি কমান্ডার, র্যাব- ১২ কুষ্টিয়া ও তার একদল চৌকস বাহিনী, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, কুষ্টিয়া সহ আরও অনেকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।
মানহীন এসব পণ্য ব্যবহারে চর্মরোগসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতার শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়ে চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আলাউদ্দিন বলেন, নকল প্রসাধনীগুলোয় ইচ্ছেমতো রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। এসব রাসায়নিক বেশিমাত্রায় প্রয়োগের ফলে মানবদেহে ক্যানসার, এলার্জি, ত্বকের প্রদাহ, কিডনির ক্ষতিসহ বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। আর শিশুদের জন্য এসব প্রসাধনীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আরও বেশি মারাত্মক। একাধিক চর্ম বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, তাদের কাছে মুখে কালো দাগ, র্যাশ, গোটা, লাল হয়ে যাওয়া, এলার্জি ইত্যাদি নিয়ে রোগী বেশি আসেন।
দীর্ঘদিন ভেজাল প্রসাধনী ব্যবহারের কারণেই ত্বকে এ ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। তবে অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে অন্যান্য ক্ষতির সঙ্গে প্রতি বছর বিপুল পরিমান টাকা রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার।