কুষ্টিয়ায় পরিবেশবান্ধব পার্চিং পদ্ধতিতে সফলতা এসেছে। জেলার ছয়টি উপজেলার কৃষকরা এ বছর বোরো মৌসুমে ধানক্ষেতে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব উপজেলার কৃষকরা তাদের বোরো মৌসুমে রোপণকৃত ফসলের ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে দিচ্ছেন।
গাছের ডালে বিভিন্ন ধরনের পাখি বসে ক্ষতিকর পোকা খেয়ে ফেলছে এবং ওইসব পাখি পার্চিংয়ে বসে ক্ষণিক সময়ের জন্য বিশ্রামও নিচ্ছে। এভাবে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধান গাছ রক্ষা পাচ্ছে বলে জানান উপজেলা কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিসগুলো বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পার্চিংয়ের আয়োজন করেছে। এর ফলে কৃষকরা একদিকে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে, অন্যদিকে পরিশ্রমও কমে যাচ্ছে।
রোববার সকালে বলিদাপাড়া ব্লকের মশান গ্রামের কৃষক সাবান আলীর জমিতে গিয়ে দেখা যায়, সম্প্রতি রোপণ করা ধান ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে দেওয়া হচ্ছে। ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহিরুল ইসলামের পরামর্শে এই ডাল পুঁতে দিচ্ছেন তিনি।
মিরপুর উপজেলার মশান গ্রামের কৃষক আবুল কালাম জানান, জমিতে পার্চিং করা বা ডাল পালা, বাঁশের কঞ্চি পুঁতে দেয়ার পদ্ধতিটি খুবই সহজ। এর তেমন কোনো খরচও নেই। পাখি ডালে বসে মাজরা পোঁকার মথ, পাতা মোড়ানো পোঁকা মথ ও ফড়িং জাতীয় পোঁকাগুলো সহজেই ধরে খেতে পারে। এতে পোঁকা আর বংশ বিস্তার করতে পারে না।
মিরপুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি অফিসার নিহারুল ইসলাম জানান, মাটি, ফসল ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কীটনাশকের পরিবর্তে ক্ষেতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে কৃষকরা এখন বেশি সচেতন।
আরেক উপসহকারী কৃষি অফিসার মাহিরুল ইসলাম বলেন, পার্চিং পদ্ধতি হচ্ছে পাখির মাধ্যমে ফসলের পোকা দমনের উত্তম ব্যবস্থা। তিনি বলেন, আমার ব্লকের অন্তত ৩০ জন কৃষকের মাঝে এই পার্চিংয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এলাকার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ধারাবাহিকভাবে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে এর উপকারিতা সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করছে। পাশাপাশি ধান ক্ষেতের পোকা দমনের জন্য পার্চিং ব্যবহার পদ্ধতি ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।