কুষ্টিয়ার কৃষক কৃষানিরা ক্ষেতের ফসল পেঁয়াজ তোলা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে কৃষক কৃষানিদের পেঁয়াজ তোলা আর বাড়িতে নিয়ে আসা। কুষ্টিয়া জেলায় এবার পেঁয়াজের ফলনও বাম্পার হয়েছে। তবে দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষিরা।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে কুষ্টিয়া জেলায় ১২ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও সেখানে অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৯১২ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৭২ হেক্টর জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। তবে এ তথ্য কৃষকেরা মানতে নারাজ।
কৃষকরা জানায়, কৃষি অফিসের তথ্য সঠিক না কারণ তারা মাঠে নেমে কোন জরিপ করেননি। পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে আরও বেশী।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় ১ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও সেখানে অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর । খোকসা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, সেখানে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৭৪ হেক্টর। কুমারখালী উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫ হাজার ২০ হেক্টর, সেখানে অর্জিত হয়েছে ৫ হাজার ২৯০ হেক্টর। মিরপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪০০ হেক্টর সেখানে অর্জিত হয়েছে ৩২০ হেক্টর । ভেড়ামারা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২৪০ হেক্টর সেখানে অর্জিত হয়েছে ২২০ হেক্টর। দৌলতপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২ হাজার ৪২৫ হেক্টর সেখানে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৪৯৮ হেক্টর জমিতে।
কুষ্টিয়া শহরতলী বাড়াদী গ্রামের পেঁয়াজ চাষি আব্দুল করিম বলেন, এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজার দর নিয়ে আমরা হতাশায় পড়েছি।
তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপন করে ঘরে তোলা পর্যন্ত ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। সেখানে পেঁয়াজ বিঘা প্রতি উৎপাদন হয় ৫০ থেকে ৬০ মণ। যেহারে খরচ হয়েছে সে তুলনায় বাজারের মূল্য খুবই কম। পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে পারলে তবে চাষিরা কিছুটা হলেও টাকার মুখ দেখতো।
একই এলাকার অপর এক চাষি সাবেক মেম্বর নওশের আলী বলেন, তিনি ৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছে, তার এ পর্যন্ত করচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। এখনো আরো খরচ রয়েছে। তার ধারণা বিঘা প্রতি ৫০ মণ পেঁয়াজ পাবে না।
পেঁয়াজ চাষি মকসেদ আলী জানান, তিনি ইতোমধ্যে তার ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছে। এতে করে তিনি লোকসান গুনছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, কুষ্টিয়ায় এবার পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী। ফলনও হয়েছে ভালো। চাষিরা এবার পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য পাবে।