গেলো বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় এবারও কুষ্টিয়ার কৃষকরা পাট চাষের দিকে ঝুঁকেছে।
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের চাষ করেছে বলে জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদগ্তর।
তবে কৃষকরা জানান, ‘কয়েক বছর আগেও পাটের দাম ভালো না পাওয়ায় অনেক চাষী পাট চাষ ছেড়েই দিয়েছিল। গত দুই/তিন বছর ধরে পাটের দাম ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে একই সাথে দেশে ও বিদেশে পাটের চাহিদা বাড়ার কারণে চাষীও ভালো দাম পাচ্ছে। এভাবে দাম থাকলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে পাট চাষ করবেন বলে জানিয়ে প্রত্যান্ত অঞ্চলের কৃষকরা।
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়নের হাজরাহাটি এলাকার চাষি আব্দুল্লাহ বলেন, গতবছর আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। ভালো দাম পেয়েছিলাম। ১হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি করেছিলাম। দাম ভালো পাওয়ার কারণে এবং লাভবান হওয়ায় এ বছর আমি চার বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। পাটের রোগবালাই তেমন একটা নেই। পাটও বেশ ভালো হয়েছে। দাম ভালো পেলে লাভ হবে ভালোই।’
স্থানীয় পাট অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২ হাজার ২৭৮ একর জমিতে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কুষ্টিয়া সদরে ৬ হাজার ৭৯২ একর, কুমারখালীতে ১২ হাজার ৩২৫ একর, খোকসায় ১০ হাজার ৬২১ একর, মিরপুরে ১৭ হাজার ৯২ একর, ভেড়ামারায় ৮ হাজার ৭০৬ একর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৪০ হাজার ৯৭৭ একর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। গত বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো ৯০ হাজার ৫০০ একর জমি। সে বছর পাটের আবাদ হয়েছিলো ৮৯ হাজার ৫৩৪ একর জমিতে। এ বছর পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে ৪ লাখ ২৪ হাজার ৬৫৪ বেল।
পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চাষীরা পাট চাষ বেশি করেছেন উল্লেখ করে কুষ্টিয়া জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মামুন-অর-রশিদ জানান, গত বছর কৃষকরা সর্বশেষ ২৪০০-২৫০০ টাকা পর্যন্ত মণ হিসেবে পাট বিক্রি করেছেন। যখন পাট ওঠে তখনও ১৭০০-২২০০ টাকা পর্যন্ত দাম পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা জেলার প্রায় এক হাজার ৮০০ পাট চাষীদের প্রণোদনা প্রকল্পের মাধ্যমে পাট বীজ, রাসায়নিক সার দেয়া হয়েছে। মূলত পাটের দাম ভালো হওয়ায় চাষীরা পাট চাষে বেশি আগ্রহী হয়েছেন।
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ রঞ্জন কুমার জানান, এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৯৪ হাজার ২৩৫ একর জমি।কিন্ত জেলার ৬টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে মোট পাটের আবাদ হয়েছে প্রায় ৯৬ হাজার ৫১৩ একর জমিতে।