কুষ্টিয়ার মিরপুরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মী এবং দুই সন্তানের জননী ডলি খাতুনকে গলা টিপে হত্যার ঘটনায় স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজকে (৪২) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
পরে তাকে কড়া পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। দন্ডপ্রাপ্ত আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ মিরপুর উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে।
কুষ্টিয়া জজ কোটের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মিরপুর উপজেলার পশ্চিম চুনিয়াপাড়া গ্রামে বাহারুল ইসলামের মেয়ে ডলি খাতুনের সাথে ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাব বিয়ে হয় একই উপজেলার শামুখিয়া গ্রামের হান্নান ওরফে সন্টু কবিরাজের ছেলে আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজের।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডলির সাথে কামালের পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো। এর মধ্যেই ডলি মিরপুর থানার তালবাড়ীয়া পরিবার পরিকল্পনা অফিসে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি পান। চাকরি পাওয়ার পর থেকে ডলি খাতুনের ওপর তার স্বামী কামাল নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল সকালে আসাদুজ্জামান কামালের সাথে তার স্ত্রী ডলির কথা কাটাকাটি এবং ধস্তাধস্তি হয়। এর এক পর্যায়ে কামাল তার স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহত ডলির পিতা বাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে একইদিনে মিরপুর থানায় ডলির স্বামী আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ, তার পিতা সন্টু কবিরাজ এবং মাতা আমেনা খাতুনকে আসামি একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারের পর স্ত্রী ডলিকে গলা টিপে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী প্রদান করেন আসাদুজ্জামান কামাল কবিরাজ।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে আসাদুজ্জামান কামালকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালে ২৬ জুন মামলার চুড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আবু বক্কার। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।