কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় রায়হান নামে এক যুবক হত্যা মামলায় এক নারীর আমৃত্যু ও পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে আরও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।
আমৃত্যু দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভুরকাপাড়া গ্রামের মান্নান সর্দারের মেয়ে শিখা খাতুন। এ ছাড়া এ ঘটনায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভুরকাপাড়া গ্রামের মৃত জলিল সর্দারের ছেলে মান্নান সর্দার। আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে সারজুল, মৃত জলিল সর্দারের ছেলে সাধু সর্দার, মৃত শওকত সর্দারের ছেলে বজলু সর্দার, ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ গ্রামের রাজন বিশ্বাসের মেয়ে আজমিরা খাতুন।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্তরা আদলতে উপস্থিত ছিলেন। পরে কড়া পুলিশি পাহারায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এই ঘটনার সঙ্গে কোন সম্পৃক্ততা না থাকায় মামলার অপর দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদহ গ্রামের মীর শহিদুল ইসলামের ছেলে দিনমজুর রায়হানের সঙ্গে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ভুরকাপাড়া এলাকার মোয়াজ্জেম মণ্ডলের মেয়ে সেতুর সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের কিছুদিন পর রায়হানের সঙ্গে সেতুর সঙ্গে ঝগড়া হলে সেতুকে রেখে রায়হান ঢাকাতে চলে যান। পরে ২০১৬ সালের ৫ অক্টোবর তারিখে রায়হান আবার বাড়িতে আসেন।
এর পরদিন ৬ তারিখ (বৃহস্পতিবার) রাত ৮টার দিকে তিনি একটি অজ্ঞাত ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। পরের দিন বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দুরে একটি পানের বরজে রায়হানের মরদেহ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ নিহত রায়হানের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
এই ঘটনায় নিহত রায়হানের পিতা মীর শহিদুল বাদী হয়ে ৯ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে ভেড়ামারা থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে বুধবার বেলা ১২টার দিকে মামলা রায় ঘোষণা করেন আদালত।