যত্রতত্র ইটভাটা গড়ে ওঠা ও পুকুর খননের কারণে প্রতিনিয়ত আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তিরা সিন্ডিকেট তৈরি করে মাটি বিক্রি শুরু করছেন প্রকাশ্যে দিবালোকে । এসকল সিন্ডিকেট ভেঙ্গে আবাদি জমি রক্ষা করতে হবে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় পাঁচ বছর আগেও আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৫৬৬ হেক্টর । কিন্তু আবাদি জমি কমতে কমতে বর্তমানে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ১১৪ হেক্টর । অর্থাৎ প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমি আবাদ অযোগ্য হয়ে পড়েছে । যার কারণে ভবিষ্যতে খাদ্য সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে এমনটি আশংকা করছেন কৃষি কর্মকর্তা।
সরকারি বিধি অনুযায়ী জমি শ্রেণীকরণ পরিবর্তনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সে বিধি মানছেন না জমির মালিকরা। ফলে দেদারছে জমি কেটে পুকুর খননসহ বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছেন ।
বালুমহাল ও জমি ব্যবস্থাপনা আইনে পুকুর খনন করতে হলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে এবং কতটুকু গভীর করে পুকুর খনন করতে হবে তারও নির্দেশনা রয়েছে। এর কোনোটিই মানছেন না জমির মালিকরা। একদিকে জমির মালিকরা আইন মানছের না অন্যদিকে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারাও উদাসীন রয়েছেন।
কৃষি জমি সুরক্ষা আইন ২০১৬ তে বলা হয়েছে, যে কোন ব্যক্তি কৃষিজমি শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবেন না তবে জেলা প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবেন। আইনের ৪(১) ধারায় বলা হয়েছে যে কোন ব্যক্তি কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করতে পারবে না। পরিবর্তন করলে ওই ব্যক্তির সর্বোচ্চ তিন বছর সাজা অথবা তিন লক্ষ টাকা জরিমানা এমনকি উভয় দণ্ডও হতে পারে।
প্রচলিত আইন থাকার পরও দেদারছে মাটি বিক্রি করার ফলে আবাদি জমি কমে যাচ্ছে। যার ফলাফল সুখকর নয়। যতদ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইনপ্রয়োগের মাধ্যমে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে কৃষি জমি রক্ষায় এগিয়ে আসুন।