সাবেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আমি কোন দুর্নীতি করিনি, কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তি হোক। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের তদন্ত করতে দুদককে সব ধরনের সহযোগীতা করা হবে। বুধবার ( ১২ আগস্ট) দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি নিজেকে সৎ দাবি করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ডাকে সাড়া দিয়ে সকাল ১০টার কিছু আগে সেগুনবাগিচার কার্যালয়ে যান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আবুল কালাম। এরপর ১০টার দিকে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে দুদক। আগামীকাল বৃহস্পতিবারও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলবে বলে জানা গেছে।
দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনটার দিকে দুদক কার্যালয় থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সাবেক এই কর্মকর্তা। এসময় তিনি সাংবাদিকদের কোন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় তিনি দাবি করেন, ‘কিছু দিন ধরেই তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেই তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করিনি, আমি সৎ, দক্ষ ও সজ্জন হিসেবে কাজ করেছি। দুর্নীতি যেই করুক আমি তার শাস্তি চাই, দুদককে আমি সহযোগিতা করব। তিনি আরও বলেন, যেহেতু আমার সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তাই আমি পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছি। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছে ‘
করোনাকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী ও শেখ মো. ফানাফিল্যা পৃথক চিঠির মাধ্যমে তাকে তলব করেছিলেন। মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিএমএসডি-এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার নিমিত্ত নিন্মমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জামাদি ক্রয়সহ বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহের নামে অন্যান্যদের যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তার বক্তব্য গ্রহণের জন্য তলব করা হয়।
অতীব জরুরি এই পত্রে, ১২ আগস্ট দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের অনুরোধ করা হয়। পত্রে আরো বলা হয়, নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে বর্ণিত অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়ে তার কোন বক্তব্য নেই মর্মে গণ্য করা হবে।
অপরদিকে দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা স্বাক্ষরিত পত্রে ১৩ আগস্ট অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে তলব করা হয়েছে। এই পত্রে বলা হয়, সাহেদ, চেয়ারম্যান, রিজেন্ট হাসপাতাল লিঃ , উত্তরা , ঢাকা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করে করোনা সনদ দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকে চলমান অনুসন্ধানের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাকে (জনাব আবুল কালাম আজাদ) তলব করা হয়েছে।
সূত্র- ইত্তেফাক