ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে করোনার টিকা নেওয়ার ৭২ ঘন্টা পর আল্লাদী খাতুন (১৩) নামের ৭ম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত আল্লাদী খাতুন কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার দুধসরা গ্রামের টিটো হোসেনের মেয়ে। সে কোটচাঁদপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল।
জানা যায়, সারাদেশে স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার আওতায় আনা কর্মসূচি চলছে। এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার কোটচাঁদপুর পৌর পাঠাগারে বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেওয়া হয়। আল্লাদী খাতুন ওই দিন শরীরে টিকা নেয়। টিকা নেওয়ার পর মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে তাকে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
আল্লাদী খাতুনের ফুফু জাহানারা খাতুন বলেন, টিকা নেওয়ার কয়েকদিন আগে আল্লাদীর জ্বর ছিল। ওষুধ খাওয়ার পর সে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু শরীর খুব দুর্বল ছিল। টিকা নেওয়ার পর সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যারা টিকা দিল তারা জিজ্ঞাসা না করে টিকা দিল কেন?
আল্লাদীর পিতা টিটো হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে স্কুল থেকে কার্ড দিয়ে টিকা দিতে বলা হয়েছে। টিকা যেখানে দেওয়া হয়েছে সেখানে কোনো প্রকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি। টিকা দেওয়ার পর মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমার মেয়েটা মারা গেছে স্কুলের শিক্ষক আর যারা টিকা দিয়েছে তাদের কারণে। আমি এর বিচার চাই। কেন ওরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করে টিকা দিল। যদি পরীক্ষা করে টিকা দিত তাহলে আজ এই ঘটনা ঘটত না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রশিদ বলেন, মেয়েটিকে যখন হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখন জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি ছিল। মেয়েটির আগে থেকেই জ্বর ছিল। কেন সে জ্বর থাকা অবস্থায় টিকা নিল। আমরা তো ওই সময় সবাইকে বলে দিয়েছিলাম যে অসুস্থ হলে টিকা নেওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, টিকা নিয়ে মেয়েটি বাড়ি চলে যায়। পরে সে অসুস্থ হলে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনরা। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তাকে যশোরে আনা হয়। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানেও তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেয়েটা মারা যায়।