নিজের অপকর্ম ঢাকতে ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে ঝিনাইদহ আদালতে পাতানো ধর্ম বোনকে দিয়ে ধর্ষণ মামলা করিয়েছেন,সুদে ও মাদক কারবারি তবিবর রহমান এমন অভিযোগ ওই মামলার আসামীদের। মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা থেকে অব্যহতি চেয়েছেন তারা। সংশ্লিষ্টদের নিকট দাবি জানিয়েছেন,সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনেরও।
ওই মামলার আসামিরা অভিযোগ করে বলেন,ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর ইউনিয়নের কন্যা নগর গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেন তোতার ছেলে তবিবর রহমান। সে দীর্ঘদিন ধরে তাঁর নিজ বাড়িতে বাইরে থেকে নারীদেরকে নিয়ে এসে পতিতা বৃত্তি করান।
ব্যবসা করান সুদে ও ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই ঘটনাটি নিয়ে তবিবর আমাদের দোষারোপ করেন। হুমকি দেন ধর্ষণ মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেবার। তারই বহির প্রকাশের শিকার হয়েছি আমরা। ওই ঘটনার সঙ্গে আমরা কেউ জড়িত না। তবিবর রহমান তাঁর নিজের অপকর্ম ঢাকতে, পাতানো ধর্ম বোনকে দিয়ে আমাদের নামে আদালতে ওই মিথ্যা মামলা করিয়েছেন।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারী( মঙ্গলবার) ঝিনাইদহের বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের অভিযোগে ৩ জন কে আসামি করে ওই গৃহবধূকে দিয়ে মামলা করান।
ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার কুব্রেগাড়ি গ্রামের লাইনপাড়ার সিদ্দিক আলীর ছেলে মোফাজ্জেল হোসেন( ৪০), রায়পুর কামারপাড়ার সুখদাসের ছেলে দিলিপ দাস ও কোটচাঁদপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে রাসেল হোসেন( ৩০) কে।তিনি মামলায় উল্লেখ করেছেন,মোফাজ্জেল হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় হয় তাঁর। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন মোফাজ্জেল হোসেন। একপর্যায়ে আমাকে দেখা করার জন্য প্রস্তাব দেন তিনি ।
সে কথা মত সরল বিশ্বাসে গেল ২০/০১/২০২৪ ইং তারিখে কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ডে যান। এ সময় আগে থেকে ওতপেতে থাকা আসামি মোফাজ্জেল ও দিলিপ মুখে কালো কাপড় দিয়ে চেপে ধরে জোরপূর্বক মটর সাইকেলের মাঝখানে বসিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরান। এরপর তারা আলোচনা করে পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আসামী রাসেলের ড্রাগন বাগানের কুড়ে নিয়ে যান।
পরে আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাদির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষন করেন। এতে করে গৃহবধূ অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরলে গেল ২১/০১/২০২৪ তারিখে ভোরে তবিবুর রহমানের বাড়ীতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এ সময় আসামী মোফাজ্জেল হোসেন গৃহবধূর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করেন। বলেন ঘটনাটি কাউকে না বলার জন্য। বাদী ওই কথায় রাজি না হলে আসামীগণ তাদের কাছে থাকা বাদীর ধর্ষণের আপত্তিকর ছবি ওই গৃহবধূর মোবাইলে দিয়ে টাকা দাবি করেন। এর পেক্ষিতে আসামি দিলিপ দাসের কাছে ৫০ হাজার টাকাও দেন ওই গৃহবধূ । এরপর ও তারা হুমকি ধামকি অব্যহত রেখেছেন।
বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানায় মামলা করতে গেলে,পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন বলে বাদি মামলায় উল্লেখ করেছেন।
আসামিরা বলেন, তবিবর রহমানের সঙ্গে কোন আত্মীয়ের সম্পর্ক নাই ওই গৃহবধুর। সে কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা গ্রামের সাদ্দামের স্ত্রী। ওই সংসারে তাঁর ৩ টি সন্তানও আছে।
যার মধ্যে ২ টি মেয়ে ও ১ টি ছেলে। এদিকে গৃহবধূ মামলায় বাড়ির ভূল ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। উল্লেখ করেছেন স্বামী পরিত্যক্তা।
বিষয়টি নিয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন বলেন,গত ৫/৬ মাস আগে বাপের বাড়িতে বেড়াতে যাবার কথা বলে বের হন বাড়ি থেকে। এরপর আর বাড়িতে আসেন নাই। ফোন করে চলে আসতে বললে আজ আসছি কাল আসছি বলে বিভিন্ন তালবাহানা করে। তবে সে কোটচাঁদপুরে থাকে কি আমার জানা নেই। মোবাইলে জিজ্ঞাসা করলে বলেন বাপের বাড়ি বেনাপল আছি। সময় হলে চলে আসবো। কবে ধর্ষণ হয়েছে বা মামলা করেছে আমার জানা নেই। কয়েকদিন ধরে একটি ইয়াবা সেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখছি তাতে আমার স্ত্রী কে দেখা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন,আমার স্ত্রীকে আমি তালাক দেয়নি। আমার স্ত্রীও কোন তালাক দেননি। এ ছাড়া তালাকের কোন কাগজও আমার হাতে আসেনি। আজ জানতে পারলাম সে আমাকে তালাক দিয়েছেন বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
মামলা প্রসঙ্গে তবিবর রহমান বলেন,কন্যানগর বাজারে আমার চায়ের দোকান ছিল। ওই দোকান থেকে আসামিদের সঙ্গে পরিচয়। আর মোফাজ্জেল আমার শ্বশুর বাড়ির দিক থেকে আত্মীয়। সে সুবাধে আমার বাড়িতে তাদের যাতায়াত ছিল। তারা আমার ধর্ম বোনের সঙ্গে এমন কাজ করবে আমি বুঝতে পারিনি। আমি কোন মিথ্যা মামলা করায়নি। তারা পরিকল্পিত ভাবে তাকে ধর্ষন করেছেন। ওই মামলায় আমার বোনই বাদি হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। তারা যা বলছেন মিথ্যা,বানোয়াট কথা।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর মডেল থানার ডিউটির উপপরিদর্শক (এসআই) গৌরাঙ্গ হরি বলেন,আদালতের মামলা সম্পর্কিত কোন কাগজ আমাদের কাছে আসে না। থানা থেকে যদি আমাকে তদন্তের জন্য দেন,সে সময় আমরা জানতে পারি। এ সম্পর্কে জানতে আপনারা থানার বকসির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এদিকে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা থেকে অব্যহতি চেয়েছেন আসামিরা। দাবি জানিয়েছেন সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনেরও।