অবশেষে জনতার হাতে ধরা পড়েছে চোরাই ছাগলসহ সেই প্রাইভেট কারটি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কোটচাঁদপুরের সাবদারপুর মকছেদ মোড় থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। ওই ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কোটচাঁদপুর সিনেমা হল পাড়া থেকে দুইটি ছাগল চুরি করে পালানোর সময় দেখতে পান ছাগলের মালিক সুমি খাতুন। এ সময় তিনি পাশের বাড়ির বাঁধন রাজবীর (নিশু)কে ঘটনাটি বলেন। এরপর নিশু তাঁর মটর সাইকেল নিয়ে ধাওয়া করেন প্রাইভেট কারটিকে। চোরেরা ধাওয়া খেয়ে বেশ কয়েক বার নিশুকে ফেলে দেবার চেষ্টা করেন । এরপরও প্রাইভেট কারটি ধরতে সে ছিল নাছোড় বান্দা। অবশেষে জনতার সহায়তায় কোটচাঁদপুর সাবদারপুর মকছেদ মোড় থেকে প্রাইভেট কারটি আটকাতে সক্ষম হন নিশু।
এ সময় বাবু মন্ডল নামের একজনকে আটক করতে পারলেও পালিয়ে যান অনিক নামের আরেক চোর। প্রাইভেট থেকে উদ্ধার হয় চোরাই ৪ টি ছাগল। পরে সাবদারপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর থানায় মামলা হয়েছে। মামলা নাম্বার ৪, তারিখ-১০-১২-২৪। এর আগে এই চোর চক্র কোটচাঁদপুরের নওদাগ্রামের মশিয়ার রহমানের ছাগল চুরি করে নিয়ে যান। এ ছাড়া সম্প্রতি কোটচাঁদপুর সিনেমা হল পাড়া থেকে চুরি করেন আরো দুইটি ছাগল। যা ধরা পড়েছে সিসি টিভি ফুটেছে। চুরি করেছেন সাবদারপুর মকছেদ মোড়ের মফিজুর ও সুজনের ৩ টি ছাগল।
বিষয়টি নিয়ে সুজন হোসেন বলেন, কয়েকদিন হল আমার ১ টা ছাগল ও পাশের মফিজুরের ২ টি ছাগল চুরি করে নিয়ে যায় এভাবে প্রাইভেট কারে করে। ওই প্রাইভেট কারের নাম্বার আর ধরা পড়া প্রাইভেটের একই নাম্বার বলে দাবি তাঁর।
তিনি বলেন, চোর চক্র দীর্ঘদিন ধরে এভাবে প্রাইভেটে করে এলাকায় চুরি আসছেন। তারা গাড়ি নাম্বার ঠিক রেখে পরিবর্তন করে গাড়ি। যে কারনে তারা মানুষের নজরে আসে না। ফলে চোর চক্র নির্বিঘ্নে তাদের চুরি কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল এলাকায়। গতকাল মঙ্গলবার তাদেরকে ধরার পর বেরিয়ে পড়েছে প্রাইভেট দিয়ে ছাগল চুরির আদ্যপান্ত। তারা ওই চোর চক্রের দৃষ্টান্ত মু্লক শাস্তি চান।
বাঁধন রাজবীর নিশু বলেন, এর আগে আমাদের ওই পাড়া থেকে প্রাইভেটে করে ছাগল চুরি করে নিয়ে যান। গতকাল মঙ্গলবার ছাগল চুরি ঘটনা দেখতে পান ছাগলের মালিক। তারপর আমাকে বললে আমি প্রাইভেট কারটি ধাওয়া করে কোটচাঁদপুরের মকছেদ মোড় থেকে জনতার সহায়তায় আটকাতে পারি। আমি প্রাইভেট কারটি ধাওয়া দেয়ার সময় তারার আমার বেশ কয়েক বার ফেলে দেবার চেষ্টা করেন। তারপরও আমি জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষের উপকারের জন্য চোর ধরার চেষ্টাটা করেছিলাম।
বাঁধন রাজবীর নিশু কোটচাঁদপুর পৌর ছাত্র দলের আহবায়ক বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোটচাঁদপুরের সাবদারপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম, জনতা চোর ধরে আমাদের খবর দেন। আমরা তাদেরকে হেফাজতে নিয়ে কোটচাঁদপুর থানায় হস্তান্তর করেছি। পরে ওই ব্যাপারে মামলা হয়েছে। মামলা নাম্বার ৪। ওই মামলায় দুই জনকে আসামী করা হয়েছে। যার রয়েছে মধ্যে বাবু মন্ডল( ৫৫)। সে কালিগঞ্জের আড়পাড়া গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে।
অন্যজন অনিক হোসেন। সে যশোরের বাসিন্দা। তবে বর্তমানে অনিক পলাতক রয়েছে। তিনি আরো বলেন, মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে বলা সম্ভব হবে এর সঙ্গে আর কারা জড়িত আছেন। বর্তমানে উদ্ধার হওয়া প্রাইভেট কার ও ছাগল ৪ টি থানা হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।