ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে সুজন হালদার (৩২) নামে এক লেবার শ্রমিক গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার জট খুলতে শুরু করেছে। আত্মহত্যা নয়! সুজনকে হত্যা করা হয়েছে এমন প্রমান মিলেছে ময়না তদন্ত রিপোর্টে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আক্তারুজামান লিটন। সুজনের স্বজনদের অভিযোগ স্ত্রীর পরকীয়ার কারনে সুজনকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
গেল (২৪ নভেম্বর) শনিবার সকালে শহরের সলেমানপুর পালপাড়া এলাকার একটি বাগানের আম গাছ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। প্রাথমিকভাবে সুজন আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করে কোটচাঁদপুর থানায় একটি (ইউ,ডি) অপমৃত্যুর মামলা হয়।
কিন্তু বিষয়টি মানতে না পেরে সুজনের মা শ্রীমতি নয়ন হালদার বাদী হয়ে আদালতে ৪ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিকে গেল ১ ডিসেম্বর পুলিশের হাতে আসে ময়না তদন্ত রিপোর্ট। তদন্ত রিপোর্টে হত্যার প্রমান পায় পুলিশ। ওই দিনই হত্যা মামলা হয় থানায়। যার নম্বর-২,তারিখ-১-১২-২০২০। আটক করা হয় মামলার দুই আসামী সুজনের স্ত্রী রুপা হালদার ও রুপার ভাই মহাদেব হালদারকে। এ দুই আসামী আটকের পর বাকিরা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
৮/৯বছর পূর্বে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ডুগডুগি গ্রামের বুদো হালদারের ছেলে সুজন হালদারের সঙ্গে কোটচাঁদপুর শহরের সলেমানপুর পাল পাড়ার মৃত অর্জুন এর মেয়ে রুপার বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে সে কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর শ্বশুরবাড়ি হালদার পাড়ায় থাকত। প্রতিবেশি, সুবল হালদার ও সুমিত্রা হালদার জানান, বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে বেশি একটা মিল ছিল না। যে কোন বিষয় নিয়ে গোলযোগ হত। কি কারনে তাকে হত্যা করা হয়েছে জানতে চাইলে বলেন,আমরা জানি সুজন আত্মহত্যা করেছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক প্রতিবেশি বলেন, রুপার পরকীয়া ছিল সুজনের মামাত ভাই অর্জুনের সঙ্গে। রুপা তাকে বিয়ে করতে ঘটনার ৭ দিন আগে ডির্ভোস করেন স্বামী সুজনকে। এ দিকে স্বজনদেরও অভিযোগ রুপার পরকীয়ায় জীবন দিতে হল সুজনকে।
এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আক্তারুজামান লিটন জানান, ময়না তদন্তে সুজনকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে বলে রিপোর্টে পাওয়া গেছে। ফলে হত্যা মামলা হয়েছে থানায়। এতোমধ্যে মামলার দুই আসামীকে আটকও করা হয়েছে।
কি কারনে হত্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিক ভাবে প্রমাণ মিলেছে পারিবারিক কলহের। তবে পরকীয়া নিয়েও পারিবারিক কলহ হতে পারে। তদন্ত চলছে, শেষ হলে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। সেই সাথে বাকি আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশ।