মাকে খুঁজে ফিরছেন দুই নবজাতক। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ডাক্তার ফাহিম উদ্দীনের ভুলে ১১ দিনের ব্যবধানে প্রাণ যায় দুই প্রসূতি মায়ের। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো তিন পরিবার। এদিকে মায়ের দুধ ও আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত দুই নবজাতকের কান্না থামছে না। দুই প্রসূতি মায়ের রেখে যাওয়া শিশু সন্তান আয়েশা ও ইব্রাহিম খুঁজে ফিরছেন তাদের মায়ের । এরপরও সেই ডাক্তার বহাল তবিয়তে কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করলেও দেখার কেউ নাই। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, গেল ২৩ নভেম্বর সোমবার ডাঃ ফাহিমের ভুলের শিকার হন কোটচাঁদপুরের বড়বামনদহ গ্রামের হামিদুর রহমানের স্ত্রী মিতা খাতুন। সন্তান প্রসব করলেও মা ডাক জোটেনি ওই মায়ের কপালে। তাঁর আগেই পৃথিবীর মায়া ছাড়তে হয় তাকে। স্থানীয় নাসিং হোমে এ অপারেশনটি করেছিলেন ওই ডাক্তার। গেল ১৩ নভেম্বর মারা যান কোটচাঁদপুর পারলাট গ্রামের ডালিম হোসেনের স্ত্রী অঞ্জনা খাতুন নামে আরো এক প্রসূতি। রেখে যান আয়েশা নামে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। মায়ের ডাক জোটেনি তার ভাগ্যেও। ওই একই ক্লিনিকে অপারেশন করেন ডাক্তার ফাহিম। এ ছাড়া ওই ডাক্তারের ভুল অপারেশনে আর্থিক ক্ষতি ও জীবন যেতে বসে ছিল মহেশপুরের আলামপুর গ্রামের আবু তাহের কালুর স্ত্রী নাজমা খাতুন। উন্নত চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে তিন লাখেরও বেশি টাকা।
এ অপারেশনটিও ডাঃ ফাহিম উদ্দীন করেছিলেন স্থানীয় জনতা ক্লিনিকে। এ ব্যাপারে আদালতে মামলাও করেছিল ভুক্তভোগীরা। ভুল অপারেশনের শিকার হয়েছেন চৌগাছার চন্দ্র পাড়ার মর্তুজার স্ত্রী মারুফা (১৮)। কোটচাঁদপুর কপোত্যাক্ষ এন্ড ফ্যামিলি কেয়ার হাসপাতালে এই অপারেশনটি করেন ওই ডাক্তার। ভূল চিকিৎসার শিকার হয়েছেন কোটচাঁদপুরের বহরামপুর গ্রামের আনিসের স্ত্রী রিনি খাতুন। এ ধরনের ঘটনা একের পর এক ঘটলেও বহাল তবিয়তে ডাক্তার ফাহিম উদ্দীন কোটচাঁদপুর ও মহেশপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করে চলেছেন। এ যেন দেখার কেউ নাই!
এ বিষয়ে ডাক্তার ফাহিম উদ্দীনের সঙ্গে কথা বলতে মোবাইলে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রশিদ বলেন,ঘটনা গুলো শুনেছি। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।