কাম্য সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তিও শর্ত পূরনে ব্যর্থ হওয়ায় এবারও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর কলেজের বিজ্ঞান বিভাগে একােিডমিক স্বীকৃতি এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। দীর্ঘ প্রায় একযুগ থেকে এ অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
এ নিয়ে এরই মেধ্য শিক্ষার্বোড কর্র্তৃক কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় কেন তাদের একাডেমিক স্বীকৃতি বাতিল করা হবে না ব্যখ্যা চেয়েছে। ফলে এক দিকে এ বিভাগের শিক্ষক-কর্মচারিরা হতাশার মধ্যে পড়লেও অন্যদিকে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদোন্নতির প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। প্রতিবছর সরকারের কোটি টাকা পানিতে ডুবিয়েও তারা বেপরোয়া।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এ কলেজটিতে বিজ্ঞান শাখায় বিগত ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়েছে ৬জন, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪ জন, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ১ জন, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে ২ জন, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ০ জন,ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হয়। এমতাস্থায় গত দু’বছর আগেও যশোর শিক্ষাবোর্ড কলেজটিকে একাডেমিক স্বীকৃতির চিঠিতে সর্তক করে বলেছে আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কাম্যসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে না পারলে আগামী শিক্ষাবর্ষে একাডেমিক স্বীকৃতির মেয়াদ নবায়ন করা হবে না।
সুত্র জানায়, এর আগে ২০১৬ সালে প্রদত্ত একাডেমিক স্বীকৃতি পত্রের নির্দেশনা অনুযায়ি শর্ত পুরন করতে না পারায় একই ভাবে কৈফিয়তের মুখে পড়ে কলেজটি। শেষ পযর্ন্ত নাকি অনৈতিক ভাবে টাকা দিয়ে নবায়ন করতে হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালে ৩ বছরের জন্য অর্থ্যাৎ ২০২১-২২ ইং শিক্ষাবর্ষ পযর্ন্ত প্রদত্ত বিজ্ঞান শাখার একাডেমিক স্বীকৃতি পত্রে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে আগামী শিক্ষাবর্ষ হতে অর্থ্যাৎ ২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষের পর বিজ্ঞান শাখায় কাম্য সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে না পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
ইতোমধ্য কিছু কলেজে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক স্বীকৃতি পত্রে নির্দেশনা অনুযায়ি তাদের একাডেমিক স্বীকৃতি স্বয়ংক্রিয় ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। তবে বাস্তবতায় শিক্ষাবোর্ড কি করে তা জানার বিষয়। এরই মধ্যে মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার একাডেমিক স্বীকৃতি গ্রহনের জন্য দৌড় ঝাপ চালিয়ে যচ্ছেন কোটচাঁদপুর পৌর কলেজ অধ্যক্ষ। কিন্তু তা কি অন্য বারের মতো শুধু গতানুগতিকতার নিয়মেই স্বীকৃতি মিলে যাবে নাকি কাঠখড়ি পোড়াতে হবে সে প্রশ্নও রয়েছে। তবে একাডেমিক স্বীকৃতি নিয়ে যেন তেমন মাথা ব্যাথা নেই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের। তারা এখন পদোন্নতি নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তারা ভাবছেন শিক্ষার্বোড স্বীকৃতিতো দেবেই।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে,বিজ্ঞান শাখায় যখন এ করুন হাল এবং সরকারের লাখ লাখ টাকা প্রতি মাসে গচ্চা যাচ্ছে,এর মধ্যেও থেমে নেই কলেজ কর্তৃপক্ষ। তারা ইতোমধ্যে এই শাখার জন্যে অনর্থক ২জন ল্যাব: সহকারি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আবার বিজ্ঞান শাখায় শিক্ষার্থী সংকটে অচলাবস্থার মধ্যেও কলেজটিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা। বিজ্ঞান বিভাগের মানোন্নয়নে ও শিক্ষাার্থীদের প্রতি মনোযোগের পরিবর্তে পদোন্নতি নিয়ে ব্যস্ততার কারনে এলাকার অভিভাবকদেও মধ্যে চলছে নানা সমালোচনাও।
একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে বার বার ব্যর্থ হয়েও নতুন করে একাডেমিক স্বীকৃতি কিভাবে পাচ্ছে কলেজ গুলো যেমনটি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর কলেজেও দেখা গেছে। তাহলে বিষয়টি গতানুগতিক ধারায় চলছে কিনা? এ প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোঃ আহসান হাবিব এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন কোন ভাবেই গতানুগতিকতা নেই। আসলে অনেক সময় কলেজ শিক্ষকরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের নানা সমস্যার কথা বলে এবং শর্ত পূরনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বীকৃতির মেয়াদ বাড়িয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বার বার তো সে সুযোগ দেয়া যায় না। আমি দায়িত্ব গ্রহনের পর সব কিছুই যথাযথ সতর্কতার সাথেই চেস্টা করছি।
কলেজ শাখার পরিদর্শক একে রব্বানি বলেন, আসলে আমরা এর আগে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষকদের এবং একবার অন্তত ৫০জন অধ্যক্ষের আবেদন নিবেদনর প্রেক্ষিতে মানবিক দিক বিবেচনা করে একাডেমিক স্বীকৃতির মেয়াদ বাড়িয়েছি। তবে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির শর্ত পুরনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। ২০২০ সালে অনেক কলেজের একাডেমিক স্বীকৃতি স্থগিত করা হয়েছে। তবে কলেজ একাডেমিক স্বীকৃতির চিঠিতে স্বয়ংক্রিয় ভাবে স্বীকৃতি বন্ধের কথা বলা হলেও তিনি বিষয়টি জ্ঞ্যত নয় বলে জানান। এরই মধ্যে কোটচাঁদপুর পৌর কলেজসহ কিছু কলেজকে কাম্য সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে না পারার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।