পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ঠিক আগ মূহুর্তে নিজেদের লোক দিয়ে মামলা করিয়ে নির্বাচন বন্ধের ঘটনা দেশে নতুন সংস্কৃতি না। ক্ষমতাকে ধরে রাখতে মেয়র ও চেয়ারম্যানরা নিজেরায় কখনো সীমানা জটিলতা, কখনো অন্য সমস্যা দেখিয়ে মামলা করে ক্ষমতায় বসে থাকেন।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রতি পাঁচ বছর পর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ক্ষমতায় বসাবেন এটাই হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে এ ধরণের ভোট বন্ধ করার জন্য একটি সিণ্ডিকেট রয়েছে। প্রতি নির্বাচনের সময় খোঁজ পাওয়া যায় অনেকগুলো পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হচ্ছে না।
আগামী এপ্রিলের মধ্যে দেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভা গুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা । পৌরসভা আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তবে মামলা না থাকলেও ২০১৬ সালের ২ এপ্রিল মেয়াদ শেষ হয়েছে ঝিনাইদহ পৌরসভায়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নির্বাচন হয়নি। সম্প্রতি ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য ইসিকে পত্র দিয়েছে। মেহেরপুরের সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১১ সালে। সেখানেও সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় নির্বাচন হয়নি। একই জটিলতায় মেহেরপুর পৌরসভাতেও নির্বাচন বন্ধ ছিল। তবে ২০১৭ সালে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের ফলে মেহেরপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বতর্মানে দেশে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৯। এর মধ্যে নির্বাচন-উপযোগী পৌরসভার সংখ্যা ২৯১। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে নির্বাচন হবে ২৩৫ পৌরসভায় এবং এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হবে ৫৬ পৌরসভায়। কিন্তু সীমানা জটিলতা ও মামলার কারণে নির্বাচন আটকে আছে ৩৮ পৌরসভায়।
‘আদালতের স্টে অর্ডার থাকলে নির্বাচন করা সম্ভব না’ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার। তাহলে ঐ ৩৮টি পৌরসভায় কবে নির্বাচন হবে কেউ বলতে পারবে না। যেদিন আদালত নির্বাচন করতে বাধা নেই বলে আদেশ দেবে তারপরই সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করা।
নির্বাচন বন্ধে এ সকল সিণ্ডিকেটকে ভাঙতে হবে। ক্ষমতাকে আঁকড়ে ধরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে যারা বাঁধাগ্রস্থ করে তাদের চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ বিষয়ে ভ’মিকা রাখতে হবে।