কোটা সংস্কার আন্দোলনে সদ্য বিদায়ী সরকার নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত শিক্ষার্থীকে শহিদ করেছে। মৃত্যুর মিছিলে নাম লিখিয়েছেন সাধারণ জনতাও। শেষ পর্যন্ত সেই আন্দোলনের নাম হয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। শিক্ষার্থীরা সরকার পতনের এক দফা দাবি তুলে সেটি সফল করেই ঘরে ফেরেন। লাখ লাখ মানুষের আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা কেবল পদত্যাগ নয়, গোপনে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যান।
দীর্ঘ ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। সে কারণে ক্রীড়াঙ্গনেও রাজনীতির প্রভাবের বাইরে ছিল না। এবার স্বৈরাচারী শাসকের পতনের পর ক্ষোভে ফুঁসছেন ক্রিকেটাররা। দীর্ঘদিন ধরে যারা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন তারা মুখ খুলেছেন। বসে নেই ক্রিকেট কর্তারাও। মাঠে নেমে তারাও দিয়েছেন পরিবর্তনের ডাক। তাতে বিসিবিতে চলছে টালমাটাল অবস্থা। সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এখনও বিসিবির কার্যালয়ে আসেননি। কোনো পরিচালকের দেখাও পাওয়া যায়নি।
গতকাল মিরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন ক্রিকেটাররা। শহিদদের স্মরণে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম চতুরে টানানো হয়েছে ব্যানার। আবু সাঈদ, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধদের ছবি সংবলিত সেই ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘জাতীয় এই আন্দোলনে সব শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা’। আরেক ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত’। গত এক মাসে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রত্যেকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে ১ মিনিট নীরবতা পালন করে অনুশীলন শুরু করেন ক্রিকেটাররা। সে সময় সেখানে ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ, খালেদ আহমেদ, মুশফিকুর রহিম, এনামুল হক বিজয়, নাঈম হাসান, মাহমুদুল হাসান, জাকির হাসানরা।
গত পরশু বাংলাদেশ ‘এ’ দলের পাকিস্তান যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সফর বাতিল করা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল তাদের উড়াল দেওয়ার কথা রয়েছে। এই সফরে দুটি চার দিনের ম্যাচ ও তিনটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে। এ দিকে সরকার পতনের পরে একের পর এক ইস্যু নিয়ে কথা বলছেন পেসার রুবেল হোসেন। এবার তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘গত কয়েক বছরে দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিরা দেখলাম বলতেছে দেশে সুশাসন চায়। শুধুমাত্র অপছন্দের তালিকায় থাকার কারণে অসংখ্য ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেওয়া ব্যক্তিরা এখন ক্ষমতার পালা বদল দেখে রং বদলানোর চেষ্টায় আছে। একইভাবে চন্ডিকা হাতুরুসিংহেসহ তার অবৈধ কাজে সহায়তা করে দেশের ক্রিকেটকে ধ্বংস করা ব্যক্তিদের অন্তত আর কোনো দায়িত্বে দেখতে চাই না।’
এই লেখাকে সমর্থন করে নুরুল হাসান সোহান লিখেছেন, ‘ভাই অনেক কিছু বলতে চাই। কিন্তু কিছু বলেতছি না। তবে কতক্ষণ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারবো জানি না।’ কেবল ক্রিকেটাঙ্গন নয়, আরও বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার সোহান।
ফেসবুকের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এই স্বাধীন বাংলাদেশে আর কোনো প্রবাসী ভাইকে যেন এয়ারপোর্টে হেনস্তা হতে না হয়। প্রবাসীরা এয়ারপোর্টে কিছু ব্যক্তি দ্বারা প্রায়ই হেনস্তার শিকার হন। তাই আশা করব, ভবিষ্যতে সব প্রবাসীরা যেন এয়ারপোর্টে তাদের প্রাপ্য সম্মানটা পায়। এয়ারপোর্টের আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত যারা আছেন, তারা এই ব্যাপারটি অনুগ্রহ করে গুরুত্বসহকারে দেখবেন, যাতে কোনো প্রবাসী যেন হেনস্তার শিকার না হয়।’
সূত্র: ইত্তেফাক