হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার অনুমতি পেতে আদালতে যাওয়ার সরকারি পরামর্শকে শুরুতে আমলেই নেয়নি বিএনপি। দলটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে যেভাবে মুক্তি দেওয়া হয়েছে সেভাবেই তাকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিতে পারে সরকার। ফলে তারা আদালতে আবেদন নিয়ে যাবেন না। তবে খালেদার চিকিৎসার জন্য বিএনপি আবেদন না জানালেও ঠিকই তার পরিবার এগিয়ে এসেছে।
খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে পাঠাতে সরকারের কাছে আবারও চিঠি দিয়েছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। তাদের একবার আবেদন দেওয়া আরেকবার না দিতে চাওয়া উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কেউ যদি তার স্বজনের আসলেই ভালো চান, তাহলে যেকোন সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না। আদালতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপি আসলে তাদের নেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে সরকারের কাছে আবারও চিঠি দিয়েছেন তার ভাই শামীম ইস্কান্দার। তিনি বলেন, ‘বাইরে পাঠানোর জন্য দুই-তিন দিন আগে শামীম ইস্কান্দার সাহেব এসেছিলেন। ওইদিনই বলে দিয়েছি। আমার কাছে চিঠি দিয়েছেন। আইনি জটিলতার কারণে চিঠিটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। উনি (আইনমন্ত্রী) এখন ব্যাখ্যা দেবেন।’
এর আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে গিয়েছিলেন তার ভাই-বোনসহ পরিবারের সদস্যরা। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ২০২০ সালের এপ্রিলে এ ঘটনাটিকে সামনে এনে জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার, বোন সেলিমা ইসলাম, বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম দেখা করে মুক্তির আবেদন করেন। তখনও বিএনপি নেতারা দলটির পক্ষ থেকে চেয়ারপারসেন চিকিৎসার জন্য আইনগত কোনো পদক্ষেপও নেয়নি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গত ২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে মানবিক আবেদন করতে হলে প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হবে। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে মতামত চাইতে পারে। খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত হওয়ার পরও তিনি আজকে মুক্ত ও এভারকেয়ার হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন। সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে পাচ্ছেন। তারপরও তারা আবেদন করলে দেখা যাবে।’
তখন বিএনপি থেকে জানানো হয়, বেগম জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার আবেদন করেছিলেন। ফলে তাদের আর নতুন করে আবেদনের দরকার নেই। এরপরই ২৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১)-এর ধারার ক্ষমতাবলে শর্তযুক্তভাবে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায়।’