বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিদেশী শাষকরা বাংলাকে বার বার শাসন ও লুন্ঠন করেছে। বৃটিশ ও তাদের পূর্বের বিদেশীদের শাসন ও শোষণের যাতাকলে বাঙালিরা নির্যাতিত হয়েছে।
এখানকার মানুষের সুখ, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেছিলো। এখানকার মানুষের গোলা ভরা ধান থাকতো। গোয়াল ভরা গরু থাকতো। নিরাপদে সুন্দর জীবন যাপন করতো। এই সব আমাদের পূর্বশুরিরা তাদের সেই গৌরব গাঁথাকে হারিয়ে ফেলেছিল। এই বাঙালি জাতীকে নি:স্ব করে ফেলেছিল। এখানকার মানুষ প্রতিনিয়ত দারিদ্রতা অনাহারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এই বাংলা এবং বাংলার সন্তানরা।
তাই শেখ মুজিব অঙ্গীকার করেছিল এই বাংলাকে মুক্ত করে আমাদের ভাগ্যকে প্রতিষ্ঠিত করবো। সেই স্বপ্নকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু লড়াই ও সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারাবরণ করেছেন। জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে গাংনী পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিশাল সমাবেশে প্রধান উদ্বোধক ছিলেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দোদুল এমপি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণা এমপি।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক এমপি জয়নাল আবেদীন ও প্রফেসর আব্দুল মান্নান, মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সাবেক এমপি মকবুল হোসেন, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, গাংনী পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএম মোজাম্মেল হক আরো বলেন, তুমি কে আমি কে বাঙালি বাঙালি, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা মেঘনা যমুনা। এই ম্লোগানে ঐক্যবদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু ১৯৭০ এর নির্বাচনে এই বাংলাদেশের মানুষ বঙ্গবন্ধুর মনোনিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নিরুঙ্কুশ সংখ্যাগোরিষ্ঠতা দিয়েছিলেন।
অবশেষে বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভোম বাংলাদেশ হবে। যে বাংলাদেশ বাঙালিরা আত্মনিয়ন্ত্রণ করবে এবং সুখি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে। ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময় আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এদেশের কৃষক শ্রমিক ক্ষেত মজুর, জেলে, তাঁতী, হিন্দু, মুসলমান, বৈদ্ধ, খ্রীষ্টান ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালি হাতে বাশের লাঠি নিয়ে রক্ত দিলো।
লক্ষ ছিল আমরা পেট পুরে ভাত খাবো, আমাদের পরনে কাপড় থাকবে, নিজেদের একটি বাসস্থান থাকবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া শিখবে। সে লক্ষ নিয়ে আমাদের পুর্বশুরিরা লড়াই করেছেন যুদ্ধ করে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু নির্দেশ দিয়েছেন আমি যদি হুকুম দেবার না পারি, তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করবে।
২৫ মার্চের দিবাগত রাতের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বললেন এটিই আমার শেষ ম্যাসেজ। শত্রুর শেষ সৈন্যটি নিশ্চিহৃ না করা পর্যন্ত তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। এই আহবানে সমগ্র জাতি মুক্তযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়লো। লড়াই সংগ্রাম করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনলো। বাংলাদেশের মানুষের র্অর্থনৈতিক মুক্তি, রাজনৈতিক মুক্তি, সামজিক মুক্তি।
সেই মুক্তির লক্ষে যখন কাজ করলেন তখন ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট একাত্তরের পরাজিত শক্তি যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল, আল বদর, আল সামস, যারা পাকিস্থানী হানাদারদের সহযোগীতা করেছিল তাদের দোষররা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলো। এদিকে নব্য পাকিস্থানী দালাল খুনি মুস্তাক ও খুনি জিয়ার উত্থ্যান হলো।
পাকিস্থানের কবর রচনার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল। বাংলাদেশের মুল নীতি সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ, সেই বাংলাদেশ একটি শোষনমুক্ত বাংলাদেশ খুনি জিয়া ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো পদদলিত করে জাতীয়তাবাদকে বিকৃত করা হলো। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুল্যবোধ সেটিকে বিলুপ্ত করা হয়। গণতন্ত্রকে ছিনতাই করা হলো। খুনি জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রণকে ছিনতাই করেছিল।
উর্দি পরে একদিকে জেনারেল, সেনাবাহিনীর প্রধান অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি। ১৯৭৯ সালের মে মাসে না এর বাকস উপুড় করে হা বাকস চিৎ করে রেখে ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের কবর রচনা করলেন জিয়াউর রহমান। ধর্মনিরপেক্ষতা কবর রচনা করে একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানালেন জিয়াউর রহমান।
বঙ্গবন্ধুর হত্যা ও জাতীয় নেতা হত্যার বিচার করা যাবেনা সেটিকে আইনে পরিণত করে ইন্ডিমেনিটি অধ্যাদেশ চালু করেছিল। সেই থেকে মানবাধিকার হরণ শুরু হয়েছে। আজকে যখন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশে পরিবর্তন এনেছেন।
রাস্তা-ঘাট, পুল ব্রীজ, স্কুল কলেজ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাসহ বড় বড় মেগা প্রকল্প নিয়ে যখন দেশকে উন্নয়ন করছেন। বাংলাদেশ যখন সারা দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করার জন্য শেখ হাসিনা দরিদ্র জনগোষ্ঠির জন্য বিভিন্ন ভাতা ও সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করছেন।
আবার ষড়যন্ত্র করছেন ওই খুনি জিয়াউর রহমানের প্রেতাত্মা বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আজকে ষড়যন্ত্র করছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। ক্ষুধা, দারিদ্র, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াইকে স্থব্ধ করতে ওরা আজকে মিথ্যাচার করছে। মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর আাজকে মিথ্যাচার করছে। তারা আজকে উন্নয়নকে থমকে দিতে জাতীকে বিভ্রান্ত করছে।