ছত্রাক জনিত রোগ ব্লাষ্ট। গত চার বছর ধরে মেহেরপুরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলার চাষীদের নাজেহাল করে তুলেছে। ২০১৬ সালে প্রথমবারের মত দেশে ব্লাস্ট রোগ সনাক্ত হয়। সে বছর মাঠের পর মাঠ গম পুড়িয়ে নষ্ট করতে চাষীদের। সরকারিভাবেই মেহেরপুরের দুটি খামারের বীজ গমের ক্ষেতও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরের বছর মেহেরপুরসহ ৬টি জেলায় গমের চাষে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তারপরও কিছু কৃষক গমের চাষ করাতে পুনরায় গমে ব্লাস্ট আক্রন্ত হয়। পরের বছরও কৃষি বিভাগ চাষীদের গম চাষে নিরুৎসাহীত করে। তবুও কৃষকরা তাদের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য শষ্য হিসেবে গম চাষ থেকে বিরত থাকতে পারেননি।
২০১৬ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের ব্লাস্ট আক্রান্ত হলেও অনেক পুরাতন এই রোগটি। ১৯৮৫ সালের প্রথম ব্রাজিলে গমের এই রোগটি সনাক্ত হয়। পরে ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশে এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
গমে ব্লাষ্ট আক্রান্ত হলে ফলন হ্রাস হয় এবং যেটুকু থাকে তার স্বাদ তিতা লাগে। আক্রান্ত গমের বীজ ও বাতাসের মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। চলতি মৌসুমে এখনো ব্লাস্ট রোগ নির্নয়ের সময় হয়ে উঠেনি। গমের শীষ বের হলে সাধারণত এ্ই রোগ আক্রমণ করে থাকে।
মেহেরপুরকে ব্লাস্টের হটস্পট চিহিৃত করে তিন বছর ধরে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবনে ব্যাপক গবেষনা চালানো হচ্ছে। ইতি মধ্যে বারি ৩৩ নামের একটি জাত গবেষণার মাধ্যমে কৃষি বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন যা খুবই আশাবাদি সংবাদ।
এই জাতটির মাধ্যমে কৃষকরা ব্লাস্ট প্রতিরোধী একটি জাত পাবেন এটা অবশ্যই কামনা করি। একই সঙ্গে সঠিক নির্দেশনার মাধ্যমে গমের ব্লাস্ট প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে চাষীদের অবহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। সঠিক মাত্রায় কিটনাশক প্রয়োগের ব্যবহারিক বিষয়গুলো হাতে কলমে শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই গমের ব্লাস্ট প্রতিরোধে কৃষি বিভাগের পাশাপাশি কৃষকরাও ভুমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।
-সম্পাদকীয়