বেশি গরমে শারীরিক সমস্যা হওয়া ছাড়াও দীর্ঘস্থায়ীভাবে কিডনির রোগ, ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ, চর্মরোগ ইত্যাদি হতে পারে। এ জন্য শরীরকে যতটা সম্ভব ঠান্ডা রাখা জরুরি। খেতে হবে কম তেল-মসলাযুক্ত খাবার।
গুরুপাক খাবারে শরীর আরও বেশি গরম হয়ে ওঠে। শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য খেতে হবে-শসা, তরমুজ, ডাবের পানি, টমেটো, তালের শাঁস, কাঁচা পাকা আম, তেঁতুল, কাঁচা পেঁয়াজ, টকদই, পুদিনাপাতা, শাক ইত্যাদি।
সবজির মধ্যে-লাউ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, ধুন্দল, জালি, কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি। সবজি ভাজির চেয়ে নিরামিষ তরকারি খাওয়া ভালো।
সকাল ও বিকালের নাশতায় দই-চিরা ভালো খাবার। দইয়ে আছে প্রোবায়োটিক। যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ দূর করবে। টকদই-পুদিনাপাতা-শসা দিয়ে রায়তা করে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে। কেউ কেউ গরমের সময় পান্তা ভাত খেয়ে থাকেন। এতে শরীর যেমন ঠান্ডা থাকবে তেমনি এন্টিঅক্সিডেন্টের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শরীরে পানির অভাব দূর হয়।
ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার সময় বিশুদ্ধ ও নিরাপদ পানি সঙ্গে রাখা ভালো। এদিকে আইসক্রিম ও কোমল পানীয় পানিশূন্যতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে পিপাসার উদ্রেক বেশি হয়। ফ্রিজের ঠান্ডা পানি সরাসরি না খেয়ে স্বাভাবিক পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করা উচিত। এ সময় চা-কফি যতটা সম্ভব কম পান করা উচিত। কারণ এর ক্যাফেইন দেহে পানিস্বল্পতা ঘটায়। সবচেয়ে ভালো হয় লেবু-চা, পুদিনা চা অথবা কোল্ড টি খাওয়া। পুদিনা দিয়ে কাঁচা আমের শরবত এ সময় শরীর ঠান্ডা রাখবে।
তেঁতুলের শরবতও বেশ কাজ দেয়। তবে খুব বেশি বরফ দিয়ে পানীয় পান না করা ভালো। এতে শরীর আরও গরম হয়ে যায়। শসার সালাদ, কাঁচা আমের টক, টকদই দুপুর ও রাতের খাবারের সঙ্গে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকবে, খাবারে রুচি বাড়াবে। এগুলো হজমের সহায়ক। সালাদের সঙ্গে টকদই বা লেবুর রস মিশালেও ভালো হয়। সালাদ তৈরি করে ফ্রিজে রেখে দিয়ে কিছুক্ষণ পর খাওয়া যেতে পারে। তরমুজে আছে বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রচুর পানি। বড় মাছ ভাজা বা ভুনার চেয়ে ছোট মাছের ঝোল শরীর ঠান্ডা রাখবে। তেমনি ডালের চচ্চরির চেয়ে পাতলা ডাল খাওয়া ভালো। গরমে ডুবো তেলে ভাজা খাবার না খাওয়াই ভালো।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.) বারডেম।
সূত্র: যুগান্তর