হবু মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন কি না তা নিয়ে চিন্তিত অনেকেই। বিশেষ করে আপনজনেরা দুশ্চিন্তায় থাকেন গর্ভবতী মা এবং তার অনাগত সন্তানের সুস্থতা নিয়ে।
গর্ভাবস্থায় মায়েরা কি রোজা রাখতে পারবেন, রোজা রাখলে তাদের করণীয় কী- যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন ইম্পেরিয়াল হসপিটাল লিমিটেডের অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট (গাইনি বিভাগ) ডা. নুসরাত জাহান।
তিনি বলেন, গর্ভবস্থায় মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন। তবে যেসব মায়েরা এ সময় কোনো ধরনের শরীরিক সমস্যায় ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে রোজা না রাখাটাই উত্তম।
ডা. নুসরাত বলেন, এসব মায়েদের রোজা রাখার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সন্তানের কোনো ক্ষতির আশঙ্কা আছে কিনা তা জানতে হবে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা, প্রস্রাবের ইনফেকশন থাকলে রোজা না রাখাই ভালো।
গর্ভের প্রথম তিন মাস রোজা রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস রোজা রাখলে সমস্যা হতে পারে। কারণ এ সময় অতিরিক্ত বমি হয়ে থাকে। এছাড়া দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে গর্ভের সন্তানের নড়াচড়া কমে যায়।
রোজা রাখলে করণীয়
১. সেহরিতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। একবারে বেশি পানি পান করা যাবে না। শুধু পানি না খেয়ে লেবুর শরবত খাওয়া যেতে পারে। এতে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন।
২. ইফতারে বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের রস, ডাবের পানি ও খেজুর খেতে পারেন। কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম যা দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে। তাই খেতে পারেন কলাও।
৩. দুধ প্রোটিনের ভালো উৎস। সেহরিতেও দুধ খেতে পারেন।
৪. ইফতারে ভাজাপোড়া না খেয়ে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াই ভালো।
৫. গর্ভাবস্থায় অনেকের ওষুধ খেতে হয়। দিনের বেলার ওষুধগুলো রাতে খেয়ে নিবেন। আর যেসব ওষুধ দুইবার খাবার নিয়ম আছে তা ইফতারের সময় একবার ও শেষরাতে আরেকবার খেয়ে নিন।
যেসব সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
১. প্রস্রাবের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে, বমি হলে কিংবা অজ্ঞান হয়ে গেলে।
২. গর্ভাবস্থায় সন্তান ১২ ঘণ্টায় দশ থেকে বারো বার নড়াচড়া করে। নড়াচড়া কম অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৩. ডিহাইড্রেশনের কারণে অনেক সময় ইউটেরাসের কনট্রাকশন শুরু হতে পারে। তাই লেবার পেইন বা পেটে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।