মেহেরপুরের গাংনীতে অপহরণের ৩০ ঘন্টা পর অপহৃত উজ্জল হোসেনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যে রাতে উপজেলার তেরাইল এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অপহৃতের পিতা বাদী হয়ে গাংনী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উজ্জল হোসেন তেঁতুলবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া মাফিজুর রহমানের ছেলে। অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাংনী বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিনয়,বিকাশ ব্যবসায়ী থানাপাড়ার সাফায়েত ও মেহেরপুর সদর উপজেলার ষোলমারী গ্রামের খালেদকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া উজ্জল হোসেনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
উজ্জলের পিতা মাফিজুর রহমান জানান, বুধবার সন্ধ্যায় ৭ টায় বাড়ির পার্শে থেকে উজ্জলকে মটরসাইকেল যোগে তুলে নিয়ে যায়। সে বাড়িতে ফিরে না আসায় বিভিন্ন স্থানে সন্ধান করেও পাওয়া যায়নি। পরে রাত ৯ টার সময় ০১৭০৩-২৪৫১২৬ নং মোবাইল থেকে হাফিজ পরিচয় দিয়ে আমার প্রতিবেশি নাজিম উদ্দীনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে আমার সাথে কথা বলে। হাফিজ ভারতীয় ভুখন্ডে রয়েছে দাবি করে জানায় তার ছেলে উজ্জলকে অপহরণ করেছে তারা এবং অপহৃত উজ্জল তাদের কাছে জিম্মি রয়েছে। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে তা না হলে হত্যার হুমকি দেন। পরে মুক্তিপণ হিসেবে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে চাইলে বিকাশ নম্বর দেন। ( বিকাশের শেষ তিন ৪২০ অক্ষর) পরে বিষয়টি পুলিশকে জানায়।
গাংনী থানার এস আই নুরুল ইসলাম নুর বলেন, বিকাশ নম্বর যাচাই বাছাই শেষে এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে বিকাশ ব্যবসায়ী থানাপাড়ার সাফায়েতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাংনী বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বিনয় ও তার সহযোগি মেহেরপুর সদর উপজেলার ষোলমারী গ্রামের খালেদকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী জানান, ঘটনাটি মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত ঘটনা বলে প্রাথমিক অবস্থায় ধারনা করা হচ্ছে। তবে ঘটনাটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছেনা।
স্থানীয় একটি সূত্রে জানান গেছে,উজ্জল হোসেনের সাথে এই চক্রটির মাদক কিংবা স্বর্ণের ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা লেনদেন রয়েছে। লেনদেনের টাকা পরিশোধ না করার কারনে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে।
অপর একটি সূত্রে জানা গেছে,উজ্জল হোসেনের বাড়ি সীমান্তের কাছে হওয়ায় এই চক্রটির সাথে চুক্তিভিত্তিক মাদক বহন করেন সে। মাদক পাচারের সময় টহলরত বিজিবির সদস্যদের দেখতে পেয়ে ফেন্সিডিল ফেলে পালিয়ে যায় উজ্জল হোসেন। পরে বিজিবি ফেলে যাওয়া ফেন্সিডিল গুলো উদ্ধার করে। উজ্জল নিজ থেকে ফেন্সিডিল গুলো বিজিবি’র কাছে ধরিয়ে দিয়েছে মর্মে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরন চাইতেই তাকে মটরসাইকেল যোগে তুলে নেয়া হয়।
তেঁতুলবাড়িয়া বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ মহিউদ্দীন জানান, উজ্জলের মা বিজিবিকে জানিয়েছে কে বা কারা বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিছে। পরে শুনতে পেয়েছি উজ্জল অপহরন হওয়ার পর উদ্ধার হয়েছে। তিনি আরো জানান, সীমান্তে বিজিবি নিয়মিত টহল টিম রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে ফেন্সিডিল সহ মাদক উদ্ধার করে।