ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে কাঁচা মরিচের বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে গাংনীতে খুচরা বাজারে মরিচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩০ টাকা। বর্তমানে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। তবে আড়তে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত মরিচ বিক্রি করছে ১৭০ টাকা কেজি।
এতে মধ্য স্বত্বভোগী আড়তদার ও ব্যবসায়িরা লাভবান হচ্ছেন। এদিকে দেশের বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং দাম নাগালের মধ্যে রাখতে বাজারে ্এলসি কাঁচামরিচ আমদানী করা হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। ব্যাবসায়ী ও উৎপাদনকারীরা হাঁসিতে ভাসলেও মরিচের ঝালে চোখ মুছতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলীত মৌসুমে উপজেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ করা হয়। অনুকুল আবহাওয়া আর ভাল দাম পাওয়ায় চাষিরা মরিচ চাষের উপর ঝুঁকে পড়েছে। আগামীতে আরো বেশী চাষ করার প্রস্তুতিও নিয়েছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে চাষিরা তাদের উৎপাদিত মরিচ বিভিন্ন আড়তে কেজি প্রতি বিক্রি করছেন ১৭০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা।
আর সেই মরিচ খুচরা ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে ১৮৫ টাকা। ব্যবসায়িরা বিভিন্ন হাটে বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে মরিচ বিক্রি করছেন ২৪০ টাকা থেকে ২৫০ টাকায়। গত শনিবার গাংনী ও সোমবার বামন্দী আড়তে চাষিরা মরিচ বিক্রি করেন কেজি প্রতি ২১০ টাকায়। এলসি মরিচ আমদানীর আভাস পেয়ে আড়তে চাষিদেরকে মরিচের দাম কেজি প্রতি দেয়া হয় ১৮০ টাকা।
গাংনীর জোড়পুকুর গ্রামের মরিচ চাষি খোকন জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। গেল বছর আড়াই বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করছিলেন। মরিচের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি বেশ খুশি। তবে এলসি মরিচ বাজারে আসলে দাম অস্বাভাবিক ভাবে কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। সোমবার কেজি প্রতি ৩০ টাকা কম পেয়েছেন আড়তে মরিচ বিক্রি করে। এতে মরিচ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠবেনা বলেও জানান এই চাষি। একই কথা জানান সাহারবাটি গ্রামের মরিচ চাষি হিটু মিয়া ।
গাংনীর কাচা বাজারের আড়ৎদার রিপন আলী জানান, প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন আড়ৎ থেকে ৫০ টনের অধিক কাঁচা মরিচ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হয়। চাষিরা আড়তে মরিচ বিক্রি করছেন এবং ভাল দাম পাচ্ছেন। আড়ৎদাররাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। তবে বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ স্বাভাবিক এবং দাম নাগালের মধ্যে রাখতে বাজারে ্এলসি কাঁচামরিচ আমদানী করা হবে বলেও জানান তিনি।
গাংনীর হ্যাপি নাইচ কাচাবাজারের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ জানান, এলসি মরিচ আমদানী করার সময় চাপে নষ্ট হয়ে যায়। আমদানী খরচ উঠাতে বেশি দামে বিক্রি করতে হয় অনেক সময়। এতে বাজারে মরিচের দাম আগের মতোই থাকতে পারে। তবে খুচরা বাজারের ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করে। এক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং করা প্রয়োজন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম শাহনেওয়াজ জানান, বাজারের দাম স্থীতিশীল রাখতে নিয়মিত মনিটরিং করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসারকে কে এম শাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, চাষিরা তাদের উৎপাদিত মরিচের দাম পাওয়ায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছে মরিচ চাষে। তবে এলসি মরিচ বাজারে আসলে চাষিদের মাঝে কোন প্রভাব পড়বে না।