মেহেরপুরের গাংনীতে কৃষকের তালিকা তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বাতিলের দাবিতে স্বারক লিপি দিয়েছে গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি ও অফিস সহকারি মোঃ হানজালার মাধ্যমে এ স্বারক লিপি প্রদান করেন গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: গোলাম মোস্তফা ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোঃ মোশাররফ হোসেন। গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: গোলাম মোস্তফা জানান,গত ৩রা মে গমচাষীদের একটি তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করা হয়। উক্ত তালিকা একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে তৈরি করা হয়েছে। তালিকায় উপজেলার প্রকৃত গমচাষীদের অন্তভুক্ত করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।
একারনে ঐ তালিকা বাতিল পূর্বক সরেজমিন যাচাই বাছাই পূর্বক প্রকৃত চাষীদের তালিকা তৈরি করার আহবান জানান তিনি। স্বারক লিপি সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: গোলাম মোস্তফা,বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আহসান উল্লাহ মহন,যুবলীগ সভাপতি মোশাররফ হোসেন,যুগ্ন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মো: মজিরুল ইসলাম,সহ সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর নবীর উদ্দীন ও সাবেক ছাত্র নেতা সাহিদুজ্জামান শিপু সহ উপজেলা বাসির পক্ষে শতাধিক কৃষক ও স্থানীয়দের স্বাক্ষরিত প্রকৃত গমচাষিদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে এ স্বারক লিপি দেয়া হয়। গাংনী উপজেলা গুদাম কর্মকর্তা মো: মতিয়ার রহমান জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৩ মে:টন গম ক্রয় করা হয়েছে।
তবে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আপতত গম ক্রয় বন্ধ রয়েছে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গমক্রয় কমিটির সভাপতি দিলারা রহমান বলেন,তালিকা যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কৃষি অফিসারকে বলা হয়েছে। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কে এম সাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ কৃষকের তালিকা দিয়েছে সেটাই চুড়ান্ত করে প্রকাশ করা হয়েছে। যেহেতেু বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে তাই তালিক নতুন করে যাচাই বাছাই করা হবে। প্রকাশিত কৃষকদের তালিকায় দেখা গেছে,গাংনী পৌর এলাকার পশ্চিম মালসাদহ গ্রামের ৯০ ভাগ কৃষক রয়েছে।
ঐ তালিকায় শিশিরপাড়া,চৌগাছা,বাঁশবাড়িয়া সহ কয়েকটি এলাকায়কে অন্তভুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন প্রতিটি ইউনিয়নে দু একটি গ্রাম ছাড়া সব গ্রামের কৃষককে বাদ দেয়া হয়েছে। পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ডেও ইউনুছ আলীর ছেলে আলী নুর ইসলাম স্বপন,ইউনুছ আলীর ছেলে আলীমুল ইসলাম,গাংনী প্রাথমিকবিদ্যালয় পাড়ার সহিদুলের ছেলে ফিরোজ,৬ নং ওয়ার্ডেও করিমের ছেলে সিরাজুল ও সিরাজুলের ছেলে জয়নুল আবেদিনের কাছ থেকে বৃহস্পতিবা মোট ১৩ টম গম ক্রয় করা হয়েছে। এসব কৃষকদের গম ছিলো কিনা তা তদন্ত করলে সিন্ডিকেটের বিষয়টি ধরা পড়বে বলে মনে করেন মোঃ মোশাররফ হোসেন ও মোঃ গোলাম মোস্তফা।
একটি সূত্র জানিয়েছে সম্প্রতি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান খাদ্য গুদাম পরিদর্শনকালে ৩০ টন অতিরিক্ত চাউলের সন্ধান পায়। খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মো: মতিয়ার রহমান সিন্ডিকেটের চাল অনৈতিক সুবিধা নিয়ে চাল সংরক্ষনে রেখেছিল। পরবর্তীতে শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার কারনে মানবিক বিষয়টি বিবেচনা করে ও ভুল শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করায় তাকে তখন ক্ষমা করে দেয় প্রশাসন। মতিয়ার রহমান গাংনীতে যোগদানের পর থেকে ফুড সিন্ডিকেট গড়ে তুলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে যা তদন্ত করলে পাওয়া যাবে। আবারো গম সিন্ডিকেট তৈরি করে নি¤œমানের গমক্রয়ের জন্য পায়তারা করছেন বলে জানান সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম মোস্তফা। তিনি আরও জানান, খাদ্য কর্মকর্তার নেতৃত্বে অন্তত ৪টি ফুট সিন্ডিকেট রয়েছে।
এসব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টাকা লুটপাট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। গাংনী উপজেলা গুদাম কর্মকর্তা মো: মতিয়ার রহমান জানান,তালিকা মোতাবেক ধান গম ও চাল ক্রয় করা হয়। অনিয়মের বিষয়টি তিনি কোন মন্তব্য করেনি।