গাংনীতে রবিউল ইসলাম মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক তরিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাশনা শারমিনকে মারধর ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আট টার সময় গাংনীর এইচএম ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও গাংনী উপজেলা ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন মিঠু ও তার লোকজন রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালে এঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন মিঠু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
তবে দেলোয়ার হোসেন মিঠু বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, একজন রোগীর নিকট থেকে অপারেশন বাবদ বেশি টাকা নিয়েছে মর্মে লিখিত অভিযোগ পাওয়ায় সংগঠনের পক্ষ থেকে তরিকুলের কাছে জানতে চাওয়ায় আমাকেই গালিগালাজ করেছে। এনিয়ে বাকবিতন্ডা ছাড়া তেমন কিছুই হয়নি।
রবিউল ইসলাম মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক তরিকুল ইসলামের অভিযোগে জানাগেছে, রবিউল ইসলাম মেমোরয়াল হাসপাতাল থেকে একটি পুরাতন এক্স-রে মেশিন বাঁকিতে ক্রয় করেন এইচএম ডায়াগনস্টিক এর পরিচালক দেলোয়ার হোসেন মিঠু। এক্স-রে মেশিনের টাকা চাইতে গেলে টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকে। পরে আমি আমার এক্স-রে মেশিনটি ফেরত নিয়ে আসি। সেই থেকে আমাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয় দেলোয়ার হোসেন মিঠু। দেলোয়ার হোসেন মিঠু স্বেচ্চাসেবক লীগ নেতার পরিচয় দিয়ে আমাকে নানা ভাবে হুমকি ধামকিসহ ভয় ভীতি দেখিয়ে আসছেন।
তিনি আরো জানায়, গত ৩১/৮/২১ ইংয় তারিখে গাংনী উপজেলার কাথুলী গ্রামের চুমকি খাতুন নামের এক ডেলিভারি রোগী ভর্তি হয় আমার ক্লিনিকে। উক্ত রোগী আমার ভোরের আলো উন্নয়ন সংস্থার কার্ড প্রাপ্ত হওয়ায় সিজার,সাধারণ বেড ও মেডিসিন বাবদ ৬৫০০ টাকায় অপারেশন করা হয়। কিন্তুু রোগীরা সাধারণ বেডে না থেকে কেবিন নিয়ে চারদিন ভর্তি থাকেন। কেবিন ভাড়া বাবদ তার কাছ থেকে চুক্তি অনুয়ায়ী নেয়া হয় ৮৫০০ টাকা। পরে দেলোয়ার হোসের মিঠু বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আট টার দিকে আমার চেম্বারে লোকজনসহ প্রবেশ করে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমরা তাকে সংযত হবার কথা বল্লে মিঠু ও তার লোকজন আমাকে ও আমার স্ত্রীকে লাঞ্চিত করে এবং আমার চেম্বারের আসবাপত্র ভাংচুর করে। এঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুুতি চলছে।
দেলোয়ার হোসেন মিঠু জানান, চুমকি খাতুন নামের একজন ভুক্তভোগী তার কাছ থেকে চুক্তি ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা নিয়েছে মর্মে আমার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। আমি যেহেতু গাংনী উপজেলার ক্লিনিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তরিকুল ইসলামও আমার সমিতির একজন সদস্য। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে আমি বিষয়টি সরাসরি জানতে গেলে তরিকুল ইসলাম ও তার লোকজন আমার ওপর চড়াও হয়ে ওঠে। এনিয়ে আমাদের সাথে বাক বিতন্ডার ঘটনা ঘটে। লাঞ্চিত করার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাকে ও আমার লোকজনকে ফাঁসাতে মিথ্যে অভিযোগ করেছেন। তবে রোগীর লিখিত অভিযোগটি দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শনিবার রাত ১২ টা পর্যন্ত দেননি।
এবিষয়ে গাংনী উপজেলা ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, আজ (আগামীকাল) রবিবার উভয় পক্ষ নিয়ে মিটিং ডাকা হয়েছে। বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা চলছে।
গাংনী থানার ওসি বজলুর রহমান বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তবে দ’ুপক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য উভয় পক্ষ সময় চেয়েছে। সমঝোতা না হলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে।