বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ও এলাকার মতামতকে অগ্রাহ্য করে এডহক কমিটিতে গোপনে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য মনোনীত করায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠছে বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
এডহক কমিটি থেকে প্রধান শিক্ষিকার মনোনীত বিতর্কিত সদস্যকে বাদ দিয়ে এলাকাবাসির মনোনীত ব্যক্তিকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য করার দাবীতে আজ সোমবার সকাল থেকে কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আঙিনায় অভিভাবক ও এলাকার গণমান্য ব্যক্তিবর্গ অবস্থান নেন।
জানা গেছে, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ২ নং কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠণ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্যব্যক্তিবর্গ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি হাজী সামসুল হককে দাতা সদস্য ও কাথুলি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জিয়াউর রহমান জিয়াকে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন গোপনে এডহক কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে বারবার নির্বাচিত ও ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানার চাচা মাঝহারুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর এলাকার মানুষ প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুনের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। প্রতিবাদে গতকাল সোমবার সকাল থেকে গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে অবস্থান নেন।
অবস্থান কর্মসৃচির নেতৃত্ব দেন,গাঁড়াবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও অভিভাবক রহিদুল ইসলাম, কুতুবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হাজী সুন্নত আলী, সদরথানীয় বিএনপি নেতা সাহেব আলী সেন্টু, বিদ্যালয়ের জমিদাতা ও এডহক কমিটির মনোনীত দাতা সদস্য শামছুল হুদা বিশ্বাস, গণ্যমান্য ব্যক্তি তাজলু হোসেন, কামরুল ইসলামসহ গাঁড়াবাড়িয়া গ্রামের লোকজন।
শিক্ষক রহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠনের জন্য আমরা অভিভাবকরা গাঁড়াবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক জিয়াউর রহমানের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথা না শুনে প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন গোপনে সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি মাহজারুল ইসলামের নাম গোপনে প্রস্তাব করায় এডহক কমিটি পাশ করিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন এই স্কুলে যোগদান করার পর থেকে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে। সরকারি বরাদ্দের স্লিপের টাকার কোন উন্নয়ন কাজ করা হয়নি। সাবেক শিক্ষক প্রতিনিধি মাজহারুল ইসলাম ও সাবেক কমিটির সাথে মিলে স্লিপের টাকাসহ স্কুলের পুরাতন বিল্ডিংয়ের দরজা জানালা গোপনে বিক্রি করে আত্মসাত করেছেন। বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন মুলক কাজ না করে বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করেন।
প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এডহক কমিটি থেকে শিক্ষক প্রতিনিধি সদস্য বিতর্কিত মাজহারুল ইসলামকে বাদ দিয়ে জিয়াউর রহমান জিয়াকে প্রতিনিধি করতে হবে। নাহলে অভিভাবকদের অবস্থান কর্মসুচি চলবে।
অভিভাবকরা আরও জানান, প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন অবিলম্বে আগের কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি মাঝারুলের নাম বাতিল করে আমাদের প্রস্তাবিত প্রার্থী জিয়াউর রহমানের নাম দিয়ে নতুন কমিটি করার দাবি জানান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আমি বিধি মোতাবেক সবকিছু করেছি।
এব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাসিরউদ্দিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কুতুবপুর সরকারি বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির ব্যাপারে কোন কিছু জানিনা। আপনার কাছে থেকে আমি প্রথম জানতে পারলাম।