অর্ধশত বছর আগে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না রেখে অপরিকল্পিত ভাবে যত্রতত্র পুকুর খনন করায় পানিতে আবদ্ধ গ্রামবাসীদের নিজ প্রচেষ্টা আর নিজ অর্থে ড্রেনেজ ব্যাবস্থা করছে মেহেরপুর জেলার গাংনীর ষোলটাকা গ্রামবাসী। পাঁচ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে অস্থায়ী ভাবে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা করা হলেও স্থায়ী দুর্ভোগ লাঘবে গ্রামবাসির দাবী সরকারি সহযোগীতা।
এলকাবাসী জানায়, প্রতিবছর বর্ষায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরো মৌসুমটা পানির নিচে তলিয়ে থাকে ষোলটাকা গ্রামের প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবার। গ্রামের মধ্যে রাস্তার দু ধারে পুকুর থাকায় গ্রামের জমে থাকা পানি নিষ্কাশন হয়না। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়ে পুরো গ্রামের মানুষ।
অনেক পরিবার কয়েক সপ্তাহ পরে পানিবন্দী দশা থেকে কিছুটা রেহাই পেলেও আড়াই শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে থাকে প্রায় সারা বছর। গ্রামের যত্রতত্র পুকুর থাকায় সব আবাদ ছেড়ে দিয়ে শুধু মাত্র মাছ চাষই একমাত্র অর্থ উপার্জনের মাধ্যম এলাকাবাসীর।
একারনে পুকুর মালিকদের কিছইু বলতে পারেনা পানিতে বন্দী হওয়া ভুক্তভোগী পরিবার গুলি।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাবে সরকারি সহযোগীতা না পেয়ে অবশেষে এলাকার সমস্যাকে সকলের সমস্যা মনে করে গ্রামবাসির আর্থিক সহযোগীতার আহব্বান করেন স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় যুবক মুনতাসির মিলন আশা এবং জাহিদ আলম।
শুরু হয় টাকা আদায়ের কাজ। এভাবে প্রায় ৫ লাক্ষাধিক টাকা আদায় করা হয় গ্রাম ঘুরে। উক্ত টাকায় শুরু করা হয় রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মানের কাজ। স্কেভিটর মেশিন দিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার ড্রেন খনন ও প্লাস্টিক পাইপ দিয়ে একটি খালে পানি নিষ্কাশন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সাবেক ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন জানান, আমরা গ্রামের মানুষকে পানিবন্দি থেকে রেহাই দিতে অস্থায়ী ভাবে পাইপ দিয়ে পানি নিষ্কাশন করার ব্যাবস্থা করা হচ্ছে। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। স্থায়ী সমাধানে সরকারি ভাবে উদ্যোগ নিলে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে গ্রামবাসী।
স্থানীয় যুবক মুনতাসির মিলন আশা বলেন, অনেক বছর আগে যারা ভুল করে যত্রতত্র পুকুর খনন করেছেন তাদের ভুলের খেশারত এখন পুরো গ্রামবাসিকে দিতে হচ্ছে। তবে সরকারি সহযোগীতা ও হস্তক্ষেপ না থাকলে ষোলটাকা গ্রামটি মেহেরপুর জেলার মানচিত্রে একদিন পুকুর হিসেবেই দেখা যাবে।
ষোলটাকা গ্রামের আর এক উদ্যোমি যুবক জাহিদ হাসান বলেন, আমরা এলকার মানুষ যা করেছি তা মাত্র সামান্য। জনপ্রতনিধিরা বারবার আশ^াস দিলেও বাস্তবে তার উল্টো হয়েছে।
ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, আমার নির্বাচনের পর থেকে জেলা প্রশাসক বরাবর অনেক বারই আবেদন করা হয়েছে। কিন্ত কোন সুরাহা হয়নি। তবে গ্রামবাসীর দুর্দশা লাঘবে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগামী সরকারি বরাদ্দ এলে সহযোগীতা করা হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আর এম সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, গ্রামবাসির দুর্দশার কথা আমি সরেজমিনে দেখে সরকারি ভাবে যা করার বা আমার যতটুকু করনীয় গ্রামবাসিকে সেভাবে সহযোগীতা দেব।