চুয়াডাঙ্গা সাতগাড়ির গুদামে জব্দকৃত ১২৬৬ বস্তা চাল জব্দের ঘটনার তদন্ত শেষ হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের দুটি তদন্ত টীমই তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
তদন্তে সাহিদুজ্জামান খোকন চাল পাচারের বিষয়ে সংশ্লিষ্টতা বা জড়িত নয় এবং আইনানুযায়ি প্রকল্প চেয়ারম্যান গণ চাল বিক্রি করেছেন বলে প্রমানিত হয়েছে।
এদিকে চাল নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দের মত বিনিময় সভায় সাংসদ সাহিদুজ্জামান খোকনের জড়িত থাকা ও তার শাস্তির দাবী অহেতুক ও দলের ভাবসুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
গাংনীর খাদ্য গুদাম থেকে ছাড় হওয়া ১২৬৬ বস্তা চাল চুয়াডাঙ্গার সাতগাড়ি বাজারের জনৈক নজরুল ইসলামের গুদামে নিয়ে যাবার সময় প্রশাসনের নজরে পড়ে। এসময় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন চাল জব্দ করেন এবং গোডাউনটি সিলগালা করেন। একই সাথে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
সেই সাথে মেহেরপুর জেলা প্রশাসনও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গেল রবিবার দুটি কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে সঠিক নিয়মে চাল বিক্রি করা হয়েছে এবং সাংসদ খোকন দোষি নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দকৃত চাল ক্রেতাকে তা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে চাল নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্য প্রকাশ পায়। গত ১০ জুন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ খালেক তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। তদন্ত টীম প্রকাশ্যে তদন্ত করা নিয়ে মন্তব্য করেন তিনি।
এ ছাড়াও এমপি খোকনের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী স্কুলে শিক্ষক নিয়োগসহ নানা দুর্ণীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন।
ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন জানান, দলীয় এমপি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির বরাদ্দ দেয়া চাল বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার কাজের জন্য প্রকল্প চেয়ারম্যানদের নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কোন অনিয়ম হলে তার দ্বায়ভার সংশ্লিষ্ট প্রকল্প চেয়ারম্যান গনের। এখানে এমপি খোকনের নাম জড়িয়ে মতোমবিনিময় সভা করাটা সমীচীন নয়। তাছাড়া মতো বিনিময় সভায় দুর্ণীতি তুলে ধরাটা কাদা ছোড়াছুড়ি ছাড়া আর কিছুই নয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা জানান, বিগত দিনেও প্রকল্প চেয়ারম্যানরা চাল বিক্রি করেছেন। তা নিয়ে কোন কথা হয়নি। এখন কেন এতো কথা ? রাজনীতিটা বংশ পরমপরায় হয় না। মতাদর্শ বাবা ছেলের এক নাও হতে পারে। খোকন ছাত্র জিবন থেকে আওয়ামীলীগ রাজ নীতিতে জড়িত। দলীয় লোকজন কাদা ছোড়াছুড়িতে মেতে উঠেছেন মাত্র। এটা এখনই পরিহার করে সকলে মিলেমিশে সরকারের কর্মকান্ডকে বেগমান করার দাবী গাংনী উপজেলাবাসীর।
অপরদিকে যাচাই বাছাই না করে সরকারের প্রশাসনিক কর্তা ব্যাক্তিরা চাল জব্দ করে গোডাউন সিলগালা করায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেন অনেকেই। চাল জব্দের সাথে জড়িত প্রশাসনের উচিৎ ছিেেলা তাৎক্ষনিক ভাবে আইন জেনে মিডিয়াকে পরিস্কার করা।
এতে গাংনী রাজনীতি ও সরকারের উন্নয়নে চরম প্রভাব পড়েছে। চাল জদ্বের ঘটনায় সোস্যাল মিডিয়াতে ঝড় ওঠে। মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কর্তৃক ডিও লেটারের মাধ্যমে ১৩ টি প্রকল্প পিআইসিদের মাঝে বরাদ্দ দেয়ায় তাকে নিয়ে অশ্লিল কথাবার্তা সহ মানহানিকর অনেক তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তি ও বিভক্তি করার চেষ্টা করা হয়।
এবিষয়ে এমপি সাহিদুজ্জামান খোকন বলেন, সত্য চিরদিনই সত্য। সৎ ব্যক্তি কখনোই জুলুমে পড়েনা। সাময়িক ভাবে কিছুটা হয়রানী হলেও পরে তা ঠিক হয়ে যায়। তবে যারা বিভিন্ন ভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন তারা তাদের ভুলের মাশুল দেবেন।