“স্থানীয় পর্যায়ে শান্তি-সম্প্রীতি সৃষ্টি করতে বৈষম্যহীন সমাজ, পরমতসহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা, বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।’
আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের গাংনী এরিয়া অফিস চত্তরে আয়োজিত “শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপ, প্রেক্ষিত গাংনী উপজেলা’ আয়োজিত শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপে এসব কথা বলেন অংশগ্রহণকারী ভিন্ন রাজনৈতিক দলের বক্তারা।
দি হাঙ্গার প্রজেক্টের সহযোগীতায় পিস ফ্যাসিলিটেটর গ্রুপ (পিএফজি) গাংনী উপজেলা শাখা দিনব্যাপি এই সংলাপের আয়োজন করে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গাংনী শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সংলাপ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি, গাংনী পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় কন্যা শিশু এডভোকেসি ফোরামের মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি ও পিএফজির উপদেষ্টা সাংস্কৃতিক সংগঠক সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম’র গাংনী উপজেলা শাখার সূরা সদস্য ও গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইসচেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সংগ্রাম, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও লুৎফুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ জাকির হোসেন,বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান আতু, মেহেরপুর জেলা যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দাল হক, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) গাংনী শাখার সাধারণ সম্পাদক ও করমদি ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবু সাদাদ মোহাম্মদ সায়েম পল্টু, মেহেরপুর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও গাংনী উপজেলা মহিলা ভাইসচেয়ারম্যান লাইলা আরজুমান বানু, গাংনী উপজেলা শাখা জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজি আব্দুল লতিফ, বিএনপি নেতা ও গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইসচেয়ারম্যান জুলফিকার আলী ভূট্টো, সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী কানন, পিএফজির গাংনী উপজেলা শাখার সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম বকুল, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির গাংনী উপজেলা শাখার সভাপতি কমরেড হাসেম আলী, গাংনী মডেল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জাহিদুর রহমান, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য অশোক চন্দ্র বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের মেহেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মেহেরপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব মোজাহিদুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব সাদ্দাম হোসেন, স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আকলিমা খাতুন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের গাংনী এরিয়া অফিসের সমন্বয়ক হেলাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত “শান্তি ও সম্প্রীতি সংলাপে” অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংস্থার দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের যশোর অঞ্চলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম, যশোর অফিসের সমন্বয়ক গিয়াস উদ্দীন প্রমুখ।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরে সংলাপ অনুষ্ঠানের বক্তারা আরও বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে শ্রদ্ধা ও ভ্রাত্তত্ববোধ বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের মধ্যে শ্রদ্ধা ও ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরী হলে স্থানীয় পর্যায়ে আইনের শাসনও প্রতিষ্ঠিত হবে, এতে বন্ধ হবে সমাজের অস্থিরতা ও সহিংসতা।
তাঁরা আরও বলেন, সমাজের কিছু ধর্মান্ধ নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করতে ভিন্ন ধর্মালম্বীদের ওপর উস্কানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করে। এসব উস্কানিদাতাদের চিহিৃত করে সকলে মিলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সকল রাজনৈতিক দল, সকল ধর্মের ও শ্রেণী পেশার মানুষের সম-অধিকার, সুযোগের সমতা ও সমমর্যাদা গড়ে তুলতে হবে।
সংলাপে উপস্থিত গাংনী মডেল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা জাহিদুল ইসলাম ও হিন্দু ধর্মীয় নেতা অশোক চন্দ্র বিশ্বাস উভয়ই বলেন, ‘সব ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ।
সাম্প্রতিক সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব “স্বারদীয় দূর্গোৎসব” বাংলাদেশের সংকাবিহীনভাবে পালনের উজ্জল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, এদেশের সকল ধর্মের মানুষ এক সাথে পূজা উৎযাপন করেছে। যা আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তাই আমাদের এই ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে ।
অনুষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী দুই ছাত্রনেতা মোজাহিদ ও সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে।’