নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার যুগিদা-কুচুইখালী ব্রিজের নির্মাণ কাজ না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে অন্তত ২০ গ্রামের কয়েক লাখ মানুষ। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাত্র ২০ ভাগ কাজ শেষ করে অর্ধেক বিল তুলে নিয়েছেন। মাঝে মধ্যে দু একজন শ্রমিক এসে কাজ করে চলে যান। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ সম্পন করার তাগিদ দেয়া ছাড়াও কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন গাংনী উপজলা প্রকৌশল অফিস।
জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরর বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে অনূর্ধ ১০০ মিটার ব্রিজ প্রকল্পের আওতায় ৬৩ মিটার ব্রিজ নির্মাণের কাজ পায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী। সে অনুযায়ি গাংনীর যুগিদা-কুচুইখালী রাস্তার ছেউটিয়া খালের উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কামার জানি সুমন জেভি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০২২ ফেব্রুয়ারি মাসে কাজ শুরু করেন। যার প্রাক্কলিত ব্যায় ধরা হয় চার কাটি ৭১ লাখ টাকা।
মাত্র কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে কাজ করায় অদ্যাবদি মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করা হয়। পুরাতন ব্রিজটি অকেজো ও চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় ব্রিজ নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ভেস্তে গেছে। ওই ব্রিজের ওপর দিয়ে অন্তত: ২০ গ্রামের কয়েক লাখ লোক চলাচল করেন। এদের মধ্যে সিংহভাগই রয়েছেন শিক্ষক শিক্ষার্থী চাকরীজীবী ও ব্যবসায়ী। পুরাতন ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলা ও বাইপাশ না থাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়ছেন এলাকাবাসী।
জুগিদা গ্রামের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম জানান, ব্রিজটি না হওয়ায় এলাকার মানুষের নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবসা বাণিজ্য শিক্ষা ও কৃষি পণ্য পরিবহণে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করায় অনেক খরচ বেড়েছে। একই কথা জানালেন শিক্ষক সিয়াম ও শিক্ষার্থী আবু জাফর। তারা বলেন, ব্রিজটি নির্মিত হলে এলাকাবাসী সব ধরনের সুবিধা পেতো অথচ এটা এখন সবার গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তিন থেকে চার দফায় কাজ করতে আসেন। দুয়েকদিন কাজ করে চল যায়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে শ্রমিকদের টাকা বকেয়া পড়ে যাওয়ায় কোন শ্রমিক আর কাজ করতে চাইছেন না।
কচুইখালি গ্রামের ইজিবাইক চালক রুপক বলেন, ভাঙ্গা ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করা যায় না। ব্রিজের এপার থেকে ওপারে যেতে ১০ গ্রাম ঘুরতে হয়। সাইকেল মোটরসাইকেল নিয়েও যাওয়া কষ্টকর। বাঁশবাড়িয়া গ্রামের ট্রাক্টর চালক সালাম জানান, চিৎলা বাহাগুদা কচুইখালি এলাকার মাঠ চাষের জন্য যেতে হয়। শুধু ব্রিজটি শেষ না হওয়ায় ৮/১০ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। এতে খরচ বেশি হয়।
ব্রিজ নির্মান ধীরগতি ও বন্ধের বিষয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সাথে একাধিকবার মুঠাফানে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ব্যবহৃত ফানটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গাংনী উপজলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের লোকজন সঠিক সময় কাজ শুরু করলেও পরে তাদের অর্থনৈতিক জটিলতা দেখা দেয়। শ্রমিক অসন্তোষের কারনে কাজটি বন্ধ ছিল। বেশ কয়েকবার তাগিদ দেয়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করছে। কাজ শেষ করার জন্য কাজের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।