আকতারুজ্জামান,গাংনীঃ
গাংনী উপজেলার বিভিন্ন মাঠে কৃষকদের বোরো ধান সিংহভাগই পেঁকে গেছে। কোথাও কোথাও ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধান কেটে ঘরে তোলার আগ্রহ থাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে কৃষি কাজকে গতিশীল করার জন্য কৃষকদেরকে ভর্তুকীতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার দেয়া হলেও সেগুলোর দেখা নেই। কালবৈশাখীর সামান্য ছোবলে কৃষকরা ধান ঘরে তুলতে না পারলে যেমন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে তেমনি দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় সাতহাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে বাম্পার ফলনের আশা করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু চাষিদের মনে নানা শঙ্কা বিরাজ করছে। কালবৈশাখীর তান্ডবে মাঠের ধান নষ্ট হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
গাংনীর ভাটপাড়া গ্রামের ধানচাষি আকতার জানান, তিনি এবার ধান চাষ করেছেন। আশানুরুপ ফল পাবেন বলেও আশাবাদী। কিন্তু কালবৈশাখীর তান্ডব শুরু হলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। তিনি আরো জানান, বর্তমানে শ্রমিক সংকট। সরকার কৃষকদের কথা ভেবে কম্বাইন্ড হারভেস্ট মেশিন সরবরাহ করেন। নাম মাত্র মূল্যে সরবরাহকৃত এ মেশিন এলাকার চাষিদের চাহিদা পুরুণের পর অন্য স্থানে চাষিদের কাজ করবে। কিন্তু এলাকায় সেসব মেশিন চোখে পড়ছে না।
সহড়াবাড়িয়া এলাকার অনেক চাষি জানান, নীচু জমির ধান কাটার জন্য বেশি প্রয়োজন এ হারভেস্ট মেশিনের। উঁচু জমির ধান কেটে বিচালী তৈরী করার কারণে অনেকে ধান কাটতে চান না হারভেস্ট মেশিনে। আর অজুহাতে এলাকার মেশিন মালিকরা দুরে ধান কাটার জন্য চলে গেছেন। বিশেষ করে হাওরাঞ্চলে এ মেশিন চলে গেছে। অথচ এ অঞ্চলের চাষিরা পড়েছেন বিপদে।
অনেকেই জানান, অনেকেই আছেন যারা হারভেস্ট মেশিন ভর্তুকীতে নিয়ে অন্যের কাছে লীজ দিয়েছেন। আবার অনেকেই বিক্রি করেছেন। যারা কিনেছেন তারাই নিজের ইচ্ছা মাফিক কাজ করছেন। কৃষি অফিস কোন তদারকি করেন না। আবার যাদের নামে এ মেশিনন দেয়া হয়েছে তারা এটি পাবার যোগ্য কি না সেটিও দেখা হয়নি।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম সাহাবুদ্দীন জানান, উপজেলায় ১৯ টি হার্ভেস্ট মেশিন দেয়া হয়েছে। এগুলো গম কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ অঞ্চলের চাষিরা গরু পালন করেন। তাই বিচালীর জন্য কেউ হার্ভেস্ট মেশিনে ধান কাটতে চান না। এ জন্যই অনেকে বাইরে মেশিন নিয়ে গেছেন।