নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রবাসীর স্ত্রী আজমিরা খাতুন। সিজারিয়ানের জন্য যখন হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুত নিচ্ছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তে ৫ জন জ্বিন তার রুমে এসে বাচ্চা প্রসব করিয়ে নবজাতককে নিয়ে যাই। নবজাতকের সাথে নিয়ে যায় গর্ভাবস্থায় পরিক্ষা নিরিক্ষার বিভিন্ন ডাক্তারি রিপোর্ট। এমন এক অলৌকিক ঘটনা ঘটেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার নওদা মটমুড়া গ্রামে। আজমিরা খাতুন গ্রামের আজমিরা খাতুন গাংনী উপজেলার মটমুড়া ইউনিয়নের নওদা মটমুড়া গ্রামের উত্তর পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে এবং উপজেলার তেতুলবাড়ীয়া মোল্লা পাড়ার ছহির উদ্দিন ছেলে সৌদি প্রবাসী মোকাদ্দেস আলীর স্ত্রী। চিহ্ন হিসেবে জ্বীনেরা রেখে গেছে ঘরের দেওয়ালে দুই হাতের রক্তমাখা ছাপ। হাত ও পায়ে জ্বিনের নখের আচড়ানো দাগ। নবজাতককে হারিয়ে দিশেহারা আজমিরা খাতুন। বিষয়টি এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছে।
আজমিরা খাতুন জানান, যখন আমি চার মাসের গর্ভবতী তখন আমার ঘরে দুটি সাপ প্রবেশ করে। সাপ দুটিকে আমি ও আমার ভাই পিটিয়ে মাওে ফেলি। এর কিছুদিন পর একটি জ্বীন এসে ঘুমান্তাবস্থায় আমার গলা চেপে ধরে এবং বলে তুই আমার বাচ্চা মেরেছিস আমি তোর বাচ্চা নিয়ে যাব।
এর আগে আজমিরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে সেবা নেন। কয়েকদিন আগে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে। সন্তান ধারনের কাগজপত্র ছিল আজমিরার ঘরে। গত রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সিজারিয়ানের জন্য হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক এমন সময় জ্বীনেরা প্রবেশ করে আজমিরার ঘরে। ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দিয়ে বাচ্চা প্রসব করায় জ্বীনের দল। আজমিরা তাদের সাথে জোর করতে গেলে সে সময় জ্বীনেরা তার উপরে শারীরিক নির্যাতন চালায়। এসময় আজমিরা আত্মচিৎকার দিলেও বাহিরের কেউ শুনতে পায়নি। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সন্তান প্রসব করানোর পর নবজাক ও হাসপাতালে রিপোর্টগুলি নিয়ে যায় জ্বীনেরা। দীর্ঘক্ষণ ঘরে থাকাই আজমিরার মা ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করে কোন সাড়া পায় না। কিছুক্ষণ পর ঘরের দরজা খুলে চলে যাই জ্বীনের দল। পরে ঘরে প্রবেশ করে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আজমিরাকে। জ্ঞান ফিরে পেয়ে আজমিরা খোজ করে তার গর্ভে থাকা নবজাতক সন্তানকে।
এলাকাবাসী জানান, তাদের সমানে আজমিরাকে গর্ভবতী অবস্থায় দেখেছে। এছাড়াও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছে। হঠাৎ গতকাল সকালে এমন ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনা আমাদের জীবনে কোনদিন শোনেননি বলেও জানান এলাকাবাসী।
আজমিরার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার মেয়ে আজমিরা যখন চার মাসের গর্ভবতী ছিল তখন দুটি সাপ মেরেছিল। সে কারণেই জ্বিনেরা নবজাতককে নিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমি মাঠে কাজ করছিলাম। এসময় বাড়ি থেকে ফোন করে বলে আজমিরাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হবে। এর কিছুক্ষণ পর ফোন দিলে কেউ ফোন ধরে না। বাড়ি ফিরে শুনছি এমন ঘটনা ঘটেছে।
আজমিরার শশুর ছইরুদ্দিন জানান, হাসপাতালে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরই মধ্যে ভাইয়ের মেয়ে রূপ ধরে প্রথমে একটি জ্বীন আসে। কিছুক্ষণ পর আরও চারজন আসে। পাঁচজন জ্বীন মিলে বাচ্চা প্রসব করাই। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে তারা। পরে বাচ্চা নিয়ে চলে গেছে।
এবিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মাসুদুর রহমান বলেন, এমন ঘটনা আমরাও শুনছি। আজমিরা আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেনি। তবে খোঁজ খবর নিয়ে পরিক্ষা করে দেখবো।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, আমি জ্বীনের এমন ঘটনা আগে কখনও শুনিনি। তবে প্রকৃত বিরয়টি উদঘাটন করার চেস্টা করছি।