মেহেরপুরের গাংনীতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নে আইআরডি-৩ প্রকল্পে সড়ক সংস্কার কাজের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার করমদী হতে কল্যানপুর কালিতলা পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যায়ে দেড় (১.৫) কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ কাজের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গার মেসার্স আরএম ব্রিক্স।
জানাগেছে, অনিয়মের অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয় কাজ। প্রাইম কোড দিলেও নিয়ম না মেনেই সময়ের আগেই কার্পেটিং শুরু করেছে। প্রাইম কোড দেওয়ার পরে ট্যাগকোড দেওয়ার নির্শনা থাকলেও তা সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের ইট, খোয়া ও কার্পেটিংয়ে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তায়। এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ কাজ বন্ধ করে দিলেও তিনি স্থান ত্যাগ করলেই আবরও কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিটুমিন ও পাথরের মিশ্রন ঠিক হয়নি তাই মালামাল সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন মেহেরপুর এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী নিঝুম আফরিন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গাংনী উপজেলায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার বছর বছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। প্রকল্প গুলোতে নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙ্গে জলে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে এসব সড়ক। ফলে দূর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীদের।
স্থানীয় যুবক শামীম হোসেন জানান, রাস্তার কাজে অনিয়মের শেষ নেই। নিম্নমানের পিচ, পাথর দিয়ে তৈরি হচ্ছে রাস্তা।
তিনি আরো বলেন, বিটুমিন মেশানোর মেশিনের কালো ধোঁয়ায় আমার ১৭দিন বয়সী শিশুর শ্বাসকষ্টসহ আশেপাশে মানুষের অনেক সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু কেউ প্রতিবাদ করতে মাহস করেনি।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শিশির আহাম্মেদ জানান, বিটুমিনে অতিরিক্ত তাপ হওয়ার কারনে কিছুটা সমস্যা হয়।পরে ওই বিটুমিন অপসারণ করে নতুন বিটুমিন দিয়ে কাজ চলছে।
তেতুঁলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস জানান, আমি গত তিনদিন আগে রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। একদমই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি হচ্ছে। উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।
গাংনী উপজেলা এলজিডির প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেন জানান, রাস্তাটি সকালে আমি পরিদর্শন করে এসেছি। তাদেরকে ট্যাগ কোড দিতে বলা হয়েছে। তারা যদি সঠিক কাজ না করে তাহলে আমি কাজ বন্ধ করে দিব।
মেহেরপুর এলজিডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন জানান, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি টিম পরিদর্শন করে এর সত্যতা পেয়েছে। বিটুমিনের যে পরিমাণ তাপমাত্রা দেওয়ার কথা ছিল তার থেকে অধিক পরিমাণ তাপমাত্রা দেওয়াই বিটুমিনগুলোকে ফেলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।