দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গাংনীর চেংগাড়া গ্রামের এক দখলবাজের আবদ্ধতা থেকে রেহায় পেয়েছে অন্তত পঞ্চাশটি পরিবার। সোমবার সকালে গাংনী উপজেলা প্রশাসন ও গাংনী থানা পুলিশের সহায়তায় আবদ্ধকৃত রাস্তাটিতে রাখা বালি অপসারণ করা হয়। রাস্তায় রাখা বালি অপসারনের পর উন্মুক্ত হয় ভুক্তভোগী পরিবারগুলি। উন্মুক্ত রাস্তায় চলাফেরা করতে পেরে ভুক্তভোগীসহ শিশু কিশোরদের মাঝে বইছে নতুন উল্লাশ।
সোমবার দৈনিক মেহেরপুর প্রতিদিন পত্রিকায় “গাংনীতে জোরপুর্বক রাস্তা দখল। আবদ্ধ অর্ধশত পরিবার” শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশের পর স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে রাস্তাটি মানুষ চলাচলালের উপযোগী করেন। প্রশাসনের ভুমিকা ও স্থানীয় সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ভুক্তভোগীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ গাংনী উপজেলার চেংগাড়া ডাক্তার পাড়ায় মানুষ চলাচলের একমাত্র শত বছরের রাস্তা দখল করে বালি রাখায় আবদ্ধ হয়ে পড়ে প্রায় পঞ্চাশ পরিবার। মালিকানা জমির দাবী করে রাস্তা ওপর বালি রাখায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়। রাস্তার ওপর থেকে বালি অপসারণ করে আবদ্ধ পরিবারদের যাতায়াতের ব্যাবস্থা করার দাবীতে গত রবিবার দুপুরে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীরা।
জানাগেছে, চেংগাড়া গ্রামের মৃত মকবুল হোসেনের ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন তার বাড়ির সামনের শত বছরের মানুষ চলাচলের একটি রাস্তা দখল করে তামাকঘর নির্মাণ করছিলেন। এবিষয়ে স্থানীয়রা আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গাংনী থানায় আদেশ জারি করেন স্থানীয় আইন শৃংখলা বজায় রাখতে।
গাংনী থানা পুলিশ তোফাজ্জেল হোসেনের তামাক ঘর নির্মাণ কাজ স্থগীত করেন এবং বালি অপসারণ করে স্থানীয়দের যাতায়াত নিশ্চিত করতে বলেন। কিন্তু দিনের পর দিন অতিবাহিত হলেও বালি অপসারণ করেনি তোফাজ্জেল হোসেন। বালি রাখার পর থেকেই আবদ্ধ হয়ে পড়ে অর্ধশত পরিবার। শিশু কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে এনামুল হক, ছহিরুদ্দীন, রফিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুল বারিসহ উপস্থিত স্থানীয়রা জানান, এটি প্রায় শত বছর ধরে মানুষ চলাচল করে। প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের একমাত্র রাস্তা এটি। সরকারি টাকায় কয়েকবার মাটি ভরাটের কাজ করে স্থানীয় শোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদ। হঠাৎ রাস্তাটি বন্ধ করে আমাদের আবদ্ধ করে রেখেছে তোফাজ্জেল হোসেন। এ নিয়ে কয়েকবার রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
তবে তোফাজ্জেল হোসেনের মেয়ে পারুলা খাতুন বলেন, জমিটি আমাদের নিজস্ব মালিকানা তাই বালি রাখা হয়েছে। আমাদের নামে কাগজপত্র রয়েছে।
তোফাজ্জেল হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বয়েকদিন পর বালি অপসারণ করব। তবে জমি আমার নামে খতিয়ান ভুক্ত হয়েছে। সরকারি খতিয়ানভুক্ত রাস্তা না।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন ভুমি অফিস ডহর উল্লেখ করে রাস্তা হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে বলে প্রত্যয়ন প্রদান করেন তহশিলদার। জনগনের রাস্তা হিসেবে সরকারি অর্থে মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে এবং দীর্ঘদিন রাস্তা হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে মর্তে প্রত্যয়ন দেন ষোলটাকা ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি।
এদিকে রাস্তাটি পুনরাই অবদ্ধ করতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তোফাজ্জেল হোসেন ও তার পরিবার। ভুক্তভোগীদের দাবী পঞ্চাশ পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি যেন আর আবদ্ধ না হয় তার জন্য প্রশাসনের ভুমিকা রাখতে সবিনয়ে অনুরোধ করেন।