জমিজায়গা সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে বাড়ির পথে বেড়া দিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এতে বেশ কিছু দিন ধরে বিড়ম্বনার শিকার একটি পরিবার। অভিযোগ রয়েছে বাড়ি থেকে রাস্তার পথের দুদিকে শক্ত করে বাঁশ আর পাটকাঠি দিয়ে প্রতিবেশীর বেড়া দেওয়ায় সহোযোগিতা করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। তবে প্রভাবশালীদের দাবি অভিযোগ মিথ্যা।
ঘটনাটি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামে। দীর্ঘদিন ধরে পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করছেন মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে মোয়াজ্জেল হক ও তার পরিবার। হঠাৎ করে বাড়ির পথে প্রতিবেশীরা বেড়া দেওয়ায় সীমাহীন সমস্যায় পড়েছেন তিনি।
মোয়াজ্জেল হক বলেন, আমাদের ৫ শরিকের মোট জমি ৩৮ শতক। এক শরিকের ভাগে আমি পাবো সাড়ে ৭ শতক। আমাদের সামনে থাকা আরেক শরিকের জমি ক্রয় করেছিল আবুল কাশেম (এখন মৃত)। মৃত আবুল কাশেমের বাড়ির সামনে দিয়ে আমাদের বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হওয়ার গলিপথ। হঠাৎ করেই সেই পথটি আটকে দিয়েছে তারা। যার ফলে আমরা খুব অসুবিধায় পড়েছি। বাঁশ ঝাড়ের পাশ দিয়ে পুকুরের কাঁদা পানির মধ্যে দিয়ে খুব কষ্টে বাড়িতে যেতে হচ্ছে। আমাদের বাড়ির পিছনে তাদের জমি রয়েছে সেই জমিতে যাওয়ার জন্য আমাদের বাড়িঘর ভেঙে তারা এখন অন্যায়ভাবে পথের দাবি করছে।
মোয়াজ্জেল হকের ছেলে পলাশ হোসেন বলেন, এটা আমাদের বাপদাদার সম্পদ। বাইরের একজন এসে এখানে জমি কিনেছে। আমাদের বাড়ির পিছনে আরেকটি জমি কিনে এখন বাড়িঘর ভেঙে পথ চেয়ে বসছে। না দেওয়ায় এখন অন্যায় ভাবে পথ চেয়ে আমাদের পথ আটকে দিয়েছে। বাড়ি থেকে বের হয়ে গরুর ঘাস নিয়ে আসা থেকে শুরু করে সবকাজে খুব অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। আমার নিজের জমিতে পথ অথচ প্রভাবশালীদের ক্ষমতার বলে পথটি আটকে হুমকি দিচ্ছে। আমরা খুব সমস্যার মধ্যে আছি এবং তাদের আইনের বিচার দাবি করছি।
পলাশ হোসেনের মা ও মোয়াজ্জেল হকের স্ত্রী বলেন, আমার শ্বশুরদের জমিতে সাড়ে ৭ শতক কিনে আবুল কাশেম। আবুল কাশেম মারা গেছে আর তার ছেলে ইলিয়াস বিদেশে রয়েছে। কিন্তু নাহিদা (ইলিয়াসের স্ত্রী) তার ভাই এবং এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোকদের হাত করে আমাদের ওপর অন্যায় করছে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। কাজকর্ম করতে পারছি না। বের হওয়ার পথ আটকে দিয়েছে লাঠিয়াল লোকজন নিয়ে এসে।
তবে বিষয়টি নিয়ে পথ আটকানো প্রতিবেশীদের কোন বক্তব্য না থাকলেও তাদের হয়ে স্থানীয় কয়েকজন জানান, মৃত আবুল কাশেমের জমি রয়েছে প্রথমে এবং শেষে। মাঝখানে রয়েছে মোয়াজ্জেল হক। মোয়াজ্জেল হককে সামনে পথ দিতে তাদের শর্ত হচ্ছে পিছনে মৃত আবুল কাশেমের জমিতে যাওয়ার জন্য মোয়াজ্জেল হকের জমির ওপর দিয়ে তাকেও পথ দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহা. আলম হুসাইন বলেন, বিষয়টি নিয়ে পরিষদে একটি অভিযোগ আসলে আমি স্থানীয় ইউপি সদস্যকে পাঠায় যাতে ওই পরিবারটির যাতায়াতের পথটি খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন ইউপি সদস্যের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। বিষয়টি যাতে সঠিক মিমাংসা হয় সেটি আমি দেখবো।